পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণে যে ভুল করা যাবে না

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা  © ফাইল ছবি

চলতি বছর একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে কয়েক মাস ধরেই। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এরইমধ্যে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলছেন, একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে সরকার। একক ভর্তি পরীক্ষা না হলে আগের নিয়মে হবে, তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিজস্ব পদ্ধতিতে এবং অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কয়েকটি গুচ্ছে পরীক্ষা হতে পারে।

সবমিলিয়ে শিক্ষার্থীদের একটু দ্বিধার মধ্যেই থাকতে হচ্ছে এবারের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে হয়তো আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে সবাইকে। তবে, সবার মনে রাখতে হবে মানবিক, বিজ্ঞান বা বাণিজ্যের তিনটি বিভাগে প্রায় একই ধরনের প্রশ্নে পরীক্ষা হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজগুলোরও আলাদা প্রশ্ন প্যাটার্ন রয়েছে। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ইচ্ছুক, সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে শিক্ষার্থীদের।

এবার যদি একক ভর্তি পরীক্ষা না হয়, তাহলে তিনটি গুচ্ছ ছাড়াও বুয়েটসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। গত বছর সবচেয়ে বেশি পরিসর ছিল ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছে। শুরুতে কিছুটা অনিশ্চয়তা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তারা একসঙ্গে পরীক্ষা নিয়েছে। একক না হলে এবারও এ ধরনের গুচ্ছ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সবমিলিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকটি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হতে পারে।

এবার যদি একক ভর্তি পরীক্ষা না হয়, তাহলে তিনটি গুচ্ছ ছাড়াও বুয়েটসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। গত বছর সবচেয়ে বেশি পরিসর ছিল ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছে। একক না হলে এবারও এ ধরনের গুচ্ছ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দেশে অর্ধশতাধিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তবে গুচ্ছ বা একক হলে সবগুলোতে পরীক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। সংখ্যায় কমে আসবে অনেক। এতে ভোগান্তি কমবে। পরীক্ষায় বসতে হবে কম। তবে বড় ঝুঁকিও আছে। এসব পরীক্ষার অধিকাংশই হয় এমসিকিউ টাইপের। ফলে ভুল করার সুযোগ কম। এতে সামান্য ভুল হলেই ভঙ্গ হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন।

এসসিকিউ উত্তরপত্রে প্রথমেই প্রার্থীর নাম, রোল নম্বরসহ কিছু তথ্য দিয়ে বৃত্ত পূরণ করতে হয়। এগুলো পূরণে সতর্ক না হলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাতিল হতে পারে উত্তরপত্র। সাধারণত এমন ভুলে নতুন উত্তরপত্র দেওয়া হয় না। প্রশ্নের উত্তরের বৃত্ত ভরাটের সময়ও বড় ধরনের ভুল হয়। দেখা যায়, অনেকে একটি প্রশ্ন বাদ দিয়ে পরেরটির উত্তর দেন। সেক্ষেত্রে বাদ দেওয়া প্রশ্নের বৃত্ত বাদ রাখতে হয়। কিন্তু অনেকে ভুলে পরের প্রশ্নের জন্য আগের বৃত্তটি ভরাট করেন।

আরো পড়ুন: একক ভর্তি পরীক্ষার চেষ্টা চলছে, সম্ভব না হলে আগের নিয়মেই

এতে উত্তর সঠিক হলেও এমসিকিউতে ভুল বৃত্ত পূরণের কারণে দুটি প্রশ্নের উত্তর বাতিল হয়ে যাবে। নেগেটিভ মার্কিংও থাকবে। ফলে ফলাফলে অনেক পিছিয়ে যেতে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় এক নম্বরের জন্য কয়েকশ’ জনের পেছনে পড়ার সম্ভাবনাও থাকে। ২-৩ নম্বরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্সও নাও হতে পারে। এ জন্য ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি এসসিকিউয়ের মতো বিষয়গুলোও নিয়মিত চর্চায় রাখতে হবে। পরীক্ষার সময় যাতে ভুল না হয়, সে জন্য নিজেকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগী হতে হয়। প্রস্তুতির পাশাপাশি সময়সূচির হালনাগাদ তথ্য রাখতে হবে। এ জন্য একটি ডায়েরি রাখা হবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। অন্যথায় তথ্যে গড়মিল হলে নষ্ট হতে পারে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে বা বিভাগে ভর্তির সুযোগ। সব দিকে মনোযোগী থাকাটাও ভর্তিচ্ছুদের জন্য একটি পরীক্ষা।

কয়েক বছর ধরেই দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। বিশেষ করে শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিযোগিতা থাকে অনেক বেশি। যদিও নতুন বেশি কিছু বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় ভর্তির সুযোগ বেড়েছে। তবে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের ভর্তিযুদ্ধে অংশ নিতে হবে। ছোট কোনও ভুল এতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ জন্য সবদিক বিবেচনা করে সচেতন থেকে ভর্তি পরীক্ষার জোরালো প্রস্তুতি নেওয়ার এখনই সময়।

লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী।


সর্বশেষ সংবাদ