বজ্রপাত থেকে বাঁচতে যা করবেন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৩, ০৭:২৭ PM , আপডেট: ০৫ মে ২০২৩, ০২:৫৯ PM
বাংলাদেশে বজ্রপাতে প্রতি বছর গড়ে দুই থেকে তিনশ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। বিশেষত বিগত কয়েকবছরে বজ্রপাতে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের (এসএসটিএফ) তথ্য অনুযায়ী শুধুমাত্র ১৩ মাসে দেশে বজ্রপাতে মারা গেছেন ৩৪০ জন। এরমধ্যে চলতি বছরেই মারা যান ৬৬ জন। বিশেষত এপ্রিল থেকে জুনে দেশে বজ্রপাতের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে কয়েকটি বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করলেই বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমানো যায়।
উঁচু গাছপালা ও বিদ্যুৎ লাইন থেকে দূরে থাকুন: সাধারণত উঁচু গাছপালা বা বিদ্যুতের খুঁটিতে বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই বজ্রসহ বৃষ্টি হলে এসব স্থানে আশ্রয় নেবেন না। এছাড়া খোলা স্থানে বিচ্ছিন্ন একটি যাত্রী ছাউনি বা এই ধরনের স্থাপনায়ও বজ্রপাতের সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই বজ্রসহ বৃষ্টির সময় এধরনের জায়গা এড়িয়ে চলা উচিত।
ধাতব বস্তু স্পর্শ করবেন না: বজ্রপাতের হতাহত ব্যক্তিদের একটা বড় অংশই আহত হন ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ স্পর্শ করে। মূলত এসব বস্তু বিদ্যুৎ পরিবাহী হওয়ায় অধিক দুর্ঘটনা ঘটে। তাই বজ্রপাত ও ঝড়ের সময় বাড়ির ধাতব কল, সিঁড়ির রেলিং, পাইপ ইত্যাদি স্পর্শ করবেন না।
জানালা থেকে দূরে থাকুন: বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না। জানালা বন্ধ রাখুন এবং ঘরের ভেতর থাকুন।
বিদ্যুৎচালিত যন্ত্র থেকে দূরে থাকুন: বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক সংযোগযুক্ত সব যন্ত্রপাতি স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন। টিভি, ফ্রিজ ইত্যাদি বন্ধ করা থাকলেও ধরবেন না। বজ্রপাতের আভাষ পেলে আগেই এগুলোর প্লাগ খুলে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করুন। অব্যবহৃত যন্ত্রপাতির প্লাগ আগেই খুলে রাখুন।
পানি থেকে সরুন: পানি খুব ভালো বিদ্যুৎ পরিবাহী তাই বজ্রপাতের সময় আপনি যদি ছোট কোনো পুকুরে সাঁতার কাটেন বা জলাবদ্ধ স্থানে থাকেন তাহলে সেখান থেকে সরে পড়ুন।
পরস্পর দূরে থাকুন: কয়েকজন মিলে খোলা কোনো স্থানে থাকাকালীন যদি বজ্রপাত শুরু হয় তাহলে প্রত্যেকে ৫০ থেকে ১০০ ফুট দূরে সরে যান। কোনো বাড়িতে যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না থাকে তাহলে সবাই এক কক্ষে না থেকে আলাদা আলাদা কক্ষে যান।
নিচু হয়ে বসুন: যদি বজ্রপাত হওয়ার উপক্রম হয় তাহলে কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসুন। চোখ বন্ধ রাখুন। কিন্তু মাটিয়ে শুয়ে পড়বেন না। মাটিতে শুয়ে পড়লে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
রবারের জুতা পরুন: বজ্রপাতের সময় চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক। এ সময় বিদ্যুৎ অপরিবাহী রাবারের জুতা সবচেয়ে নিরাপদ।
দালান বা পাকা ভবনের নিচে আশ্রয় নিন: ঘন ঘন বজ্রপাত হতে থাকলে কোনো অবস্থাতেই খোলা বা উঁচু স্থানে থাকা যাবে না। সবচেয়ে ভালো হয় কোনো একটি পাকা দালানের নিচে আশ্রয় নিতে পারলে।
বাড়ি সুরক্ষিত করুন: আপনার বাড়িকে বজ্রপাত থেকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। এজন্য আর্থিং সংযুক্ত রড বাড়িতে স্থাপন করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে দক্ষ ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ নিতে হবে। ভুলভাবে স্থাপিত রড বজ্রপাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।