ভার্সিটি-মেডিকেল-ইঞ্জিনিয়ারিং, কোনটার প্রস্তুতি কেমন?
সদ্য সমাপ্ত উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা ফলাফল হাতে পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা এখন ভর্তিযুদ্ধে নিজেকে জয়ী করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিবছর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের তুলনায় আসন কম থাকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। এতে আসন সংখ্যার তুলনায় অধিক প্রতিযোগিদের থেকে নিজেকে প্রমাণ করতে হলে প্রস্তুতিতে এগিয়ে থাকতে হয়। সেজন্য গ্রহণ করতে হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।
আমাদের দেশের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা মোটামুটি তিন ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। উচ্চশিক্ষায় প্রবেশের জন্য মেডিকেল, সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তথা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোনটির প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিৎ—
মেডিকেল ভর্তি প্রস্তুতি
আমাদের দেশে প্রতিবছর হাজার হাজার উচ্চমাধ্যমিক পাস করা শিক্ষার্থী ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে। তবে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের আশার বিপরীতে সরকারি মেডিকেল কলেজের আসন সংখ্যা থাকে চার হাজারের মতো। তাই মেডিকেল কলেজে চান্স পেতে প্রস্তুতি নিতে হবে একেবারেই নিখুঁতভাবে।
আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতি কীভাবে নেবেন
অন্যদিকে মেডিকেল ভর্তি প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে বড় একটি আশংকার বিষয় হচ্ছে তাদের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ না হলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও তাদের ভর্তির সুযোগ অনেক ক্ষীণ হয়ে আসে। যার মূল কারণ মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাসের সাথে ইঞ্জিনিয়ারিং বা সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিলেবাসের একটি বড় রকমের পার্থক্য।
তাই যাদের লক্ষ্য শুধুমাত্র ডাক্তার হওয়া এবং ভর্তি পরীক্ষার এই কয়েক মাস বাহ্যিক সকল মায়া ত্যাগ করে শুধু পড়াশোনা করতে পারবেন, তারাই কেবল মেডিকেল ভর্তি প্রস্তুতি নিতে পারেন। আর আপনারা পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে অবশ্যই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রস্তুতি নিতে পারেন। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতির সাথে মেডিক্যাল ভর্তি প্রস্তুতির বেশ ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি
তিনটি বিভাগের মধ্যে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির প্রস্তুতি নেয়া তুলনামূলকভাবে সহজ। মোটামুটি ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলেই ভালো একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আসন নিশ্চিত করা সম্ভব। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুতি নিলে আবার মেডিকেল বা ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরে যাওয়া অনেক কঠিন হয়। তবে যদি কারো লক্ষ্য হয় দেশের সবথেকে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তবে একটু ভালোভাবে প্রস্তুতি নিলেই এই সেক্টরে ভালো করা সম্ভব।
ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি
ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে মূলত ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি প্রস্তুতি নিলে ফলাফল ভালো হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। শিক্ষার্থীদের কাছে এই তিনটি বিভাগের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রস্তুতি একটু কঠিন মনে হতে পারে। তবে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রস্তুতি নেয়া একজন শিক্ষার্থী যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুত হয় তেমনি সে সহজেই ভালো করতে পারে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলোতে।
আরও পড়ুন: স্বপ্ন যাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজ
আবার কেউ যদি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রস্তুতির পাশাপাশি মেডিকেলে পড়ার লক্ষ্য স্থির করে তখন তাকে জীববিজ্ঞান, ইংরেজি, সাধারন জ্ঞানে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। যার কারণে আমরা প্রতিবছর বুয়েটের অনেক শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা মেডিকেলে চান্স পায়। আবার মেডিকেল কিছু শিক্ষার্থী আছে যারা ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়ে থাকে।
তাই সব মিলিয়ে বলা যায় যে ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি প্রস্তুতি শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল ও সফলতার দিক দিয়ে এগিয়ে রাখতে পারে। তবে পড়াশোনা কম বেশি যাই হোক না কেন, অথবা সহজ-কঠিনের হিসেবের বাইরে দেখতে হবে নিজের আগ্রহকে, শুনতে হবে নিজের ইচ্ছেকে। নিজের জীবনকে সাজাতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।
লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি