মস্তিষ্ক প্রখর করতে যে কাজগুলো করবেন

বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি
বুদ্ধিমত্তা বৃদ্ধি  © প্রতিকী ছবি

বর্তমানে সব কিছুতেই প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। পড়াশোনা অথবা কর্মক্ষেত্র সব জায়গায়ই মানুষ এগিয়ে থাকতে চায়। চাকরির জন্য ইন্টারভিউ হোক কিংবা কোন ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা সবাই বেস্ট প্রার্থীকেই খোঁজে। আর নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন প্রখর বুদ্ধিমত্তা।

বুদ্ধিমত্তা বাড়ানোর জন্য আপনাকে মস্তিষ্কের ব্যায়াম করতে হবে এবং সেইসঙ্গে রাখতে হবে খাবারের খেয়াল।গবেষণা বলছে, আমাদের খাদ্যাভ্যাসও আমাদের মস্তিষ্কের উপর প্রভাব ফেলে।

তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এমনকিছু সাধারণ কাজ সম্পর্কে, যেগুলো আপনার বুদ্ধিমত্তার উন্নতি করতে সাহায্য করবে-

সর্বদা চারপাশে মনোযোগ রাখুন:

চারপাশের পরিবেশ এবং পরিস্থিতির দিকে গভীর মনোযোগ থাকলে তা আপনাকে অনেককিছু শিখতে সাহায্য করবে। যেমন অনুভূতি, আবেগ, যুক্তি ইত্যাদি সহজে বুঝতে পারবেন। কোনো মানুষ বা অন্যকিছুর দিকে গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখলে আপনি নতুন কিছু শিখতে পারবেন। সেইসঙ্গে পাবেন নতুন কোনো দৃষ্টিভঙ্গিও।

পাজল মেলানো

মস্তিষ্কের ব্যায়াম হিসেবে পাজল মেলানো খুবই ভালো অভ্যাস। সুডোকু কিংবা শব্দ মেলানো মনকে উদ্দীপিত করে এবং দ্রুত সমাধানের জন্য উৎসাহিত করে। প্রতিদিন যদি পাজল মেলানোর অভ্যাস করেন তবে জীবনের নানা সমস্যার সমাধান করাও অনেক সহজ হয়ে যাবে। 

আরও পড়ুন: রাবিতে ‘নিরিখ’ তৃতীয় আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন শুরু বুধবার।

মেডিকেশন

মেডিকেশন বা ধ্যান আমাদের মনকে অনেকটাই তাজা করে তোলে। এটি মন থেকে সব ধরণের নেতিবাচক ও দূষিত চিন্তা দূর করে এবং সব সময় ইতিবাচক মানসিকতা ধরে রাখে। সেইসঙ্গে এটি উদ্বেগ ও হতাশাও দূর করে। প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট মেডিকেশন করলে তা আপনার বুদ্ধিমত্তা অনেকটাই বাড়িয়ে দেবে। 

নিয়েমিত সংবাদপত্র পাঠ:

প্রতিদিন সংবাদপত্র বা অনলাইন পত্রিকা পড়ার মাধ্যমে খুব সহজেই দেশ ও চলমান বিশ্ব সম্পর্কে সম-সাময়িক ধারণা পেতে পারবেন। চারপাশে কী ঘটছে সে সম্পর্কে ধারণা রাখা অবশ্যই একটি দক্ষতা। কে এ সম্পর্কিত কিছু জানতে চাইলেও আপনি সহজে উত্তর দিতে পারবেন। এতে আপনার জ্ঞান সমৃদ্ধ হবে এবং বিশ্বের কোথাও কী ঘটছে সে সম্পর্কেও সচেতন থাকতে পারবেন।

বই পড়ুন:

গল্পের বই কিংবা উপন্যাস পড়ার মাধ্যমে খুব সহজেই আপনার কল্পনাশক্তি বাড়িয়ে নিতে পারেন। একটি উপন্যাস যখন লেখা হয়, তার পেছনে লেখকের অপরিসীম সৃজনশীলতা থাকে। তাই বই পড়ার মাধ্যমে আপনার জ্ঞান তো সমৃদ্ধ হবেই সেইসঙ্গে কল্পনাশক্তি ও সৃজনশীলতাও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে আপনি অন্যদের ভাবনা ও আবেগ সম্পর্কে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন।

কৌতুহলী হোন এবং প্রশ্ন করুণ:

পৃথিবীর কোথায় কী ঘটছে তা জানার জন্য যত বেশি কৌতুহলী হবেন, তত বেশি শিখতে ও জানতে পারবেন। তাই প্রশ্ন করতে শিখুন এবং পাজল মেলানোর অভ্যাস করুন। আশেপাশের মানুষ, সহকর্মী, শিক্ষক, বস, অভিভাবক, আপনজন সবার সঙ্গে কথা বলুন। প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেই আপনি কোনো না কোনো জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন।

খাদ্যাভ্যাস-

সঠিক পুষ্টি ব্যতীত, ভালো স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস অর্জন করা কঠিন। আমাদের ডায়েট মস্তিষ্কসহ শরীরে সঞ্চালিত সমস্ত কার্যক্রমে একটি বড় ভূমিকা পালন করে। তাই কোন কোন খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং কোনগুলো পরিহার করতে হবে তা অবশ্যই জেনে রাখা উচিত।

যেসব খাবার গ্রহণ করা উচিত

১। গাঢ় সবুজ শাক, যেমন পালং শাক–জাতীয় সবজিতে আছে ফলেট, ভিটামিন বি ৯ ও লুটেনন নামের উপাদান। এটি আমাদের কগনিশনের পতন রোধে সহায়ক। এ ছাড়া ব্রুকলি, ফুলকপি, গাজরেও প্রচুর ফলেট ও ক্যারটিনয়েড আছে, যা মস্তিষ্ককে কর্মক্ষম করে তোলে।

২। সামুদ্রিক মাছের তেলে ওমেগা ৩ ফ্যাট আছে, যা মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী।

৩। নানা রকমের বাদাম যেমন আখরোট, চিনাবাদাম ও কাজুবাদামে আছে মেগা ৩, ওমেগা ৬ ফ্যাট, ভিটামিন বি ৬ এবং ভিটামিন ই। এগুলো স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে।

৩। ব্লুবেরি ও স্ট্রবেরি ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করে। এটি মস্তিষ্কের সংকেত আদান–প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৪। সূর্যমুখী ও কুমড়ার বীজে প্রচুর কোলিন, জিংক ও ভিটামিন ই আছে। সূর্যমুখীর তেল বা অলিভ তেলে রান্না করাও উপকারী।

৫। ডিমের হলুদ অংশে পানিতে দ্রবণীয় নিউট্রিয়েন্ট কোলিন আছে, যা স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া গ্রিন–টি পান করলেও ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে।

যেসব খাবার পরিহার করা উচিত

বিভিন্ন ধরণের জাংক ফুড, ভাজা-পোড়া, সফট ড্রিংকস বা কোমল পানীয়, সাদা আটা, সাদা পাউরুটি, সাদা পাস্তা, প্রক্রিয়াজাত খাবার মস্তিষ্কের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো যথাসম্ভব পরিহার করা উচিত।