লাল না সবুজ আপেল, কোনটা বেশি উপকারী

আপেল
আপেল  © সংগৃহীত

পৃথিবীজুড়ে নানা রঙের, নানা আকারের আপেলের দেখা মেলে। তবে আপেলের সবচেয়ে পরিচিত তিনটি রং হলো লাল, হলুদ ও সবুজ। তবে আমাদের বাজারে লাল ও সবুজ আপেলের দেখা মেলে। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, কোন আপেল তাহলে বেশি স্বাস্থ্যকর? কোন আপেলটা খাব? লাল নাকি সবুজ?  

প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, প্রাথমিকভাবে লাল আপেল ও সবুজ আপেলের মধ্যে কী কী পার্থক্য রয়েছে? লাল আপেল সবুজ আপেলের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি জনপ্রিয়। এর কারণ, লাল আপেল স্বাদে কিছুটা মিষ্টি আর সবখানেই এটি পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুরে ফুল ফ্রি স্কলারশিপ, সঙ্গে মাসিক ২ লাখ টাকা উপবৃত্তি

অন্যদিকে সবুজ আপেল মিষ্টি নয়, বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে খানিকটা টক স্বাদেরও বটে। লাল আপেলের মতো এটি সহজলভ্য নয়। লাল আপেলের খোসা বেশ পাতলা আর সবুজ আপেলের কিছুটা মোটা। লাল আপেলে যে প্রচ্ছন্ন রসাল ভাব লক্ষ করা যায়, সেটা সবুজ আপেলে অনুপস্থিত। এ তো গেল বাহ্যিক দিক।

এবার একটু পুষ্টির দিকে নজর দিই চলুন। লাল আপেলে মিষ্টিভাব তুলনামূলক বেশি থাকার কারণ হলো এতে চিনির পরিমাণ বেশি। পুষ্টিগত দিক থেকে লাল ও সবুজের আপেলের পার্থক্য বেশ কয়েক জায়গায়। এক, লাল আপেলে কার্বোহাইড্রেট বেশি, ফাইবার বা আঁশ কম। অন্যদিকে সবুজ আপেলে কার্বোহাইড্রেট কম, ফাইবার বেশি। তাই যাঁরা একটু কম ক্যালরির আপেল খেতে চান, তাঁদের জন্য সবুজ আপেল নিঃসন্দেহে উত্তম পছন্দ। তবে এই পার্থক্যের পরিমাণ কিন্তু খুব বেশি নয়, সামান্য। তাই লাল আপেল খেলে ওজন বেড়ে যাবে, এ রকম কথা ভাবার কোনো কারণ নেই।

আরও পড়ুন: ‘সবাই সাফল্য দেখছে, আমার যুদ্ধের গল্প কেউ জানে না’

দ্বিতীয় যে পার্থক্যটা আসে সেটা হলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে। পেকটিন, কোয়ারেকটিন ও ফ্ল্যাভোনয়েড এই দারুণ অ্যান্টি–অক্সিডেন্টগুলো সবুজ আপেলে থাকলেও, লাল আপেলে পরিমাণটা বেশি। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের কোষের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট কোষের অক্সিডেশন বা জারণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে কোষ ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়। অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট–জাতীয় খাবার আমাদের শরীরের ফ্রি র‍্যাডিক্যাল কমিয়ে দেহ থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এতে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। কোষের স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায় বলে ত্বক থাকে তারুণ্যোজ্জ্বল। তাই আপনি যদি একটু বেশি পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট পেতে চান, তাহলে লাল আপেলকেই বেছে নিন।

আরও পড়ুন: সন্তান জন্মদানে গণিত শিক্ষকের সেঞ্চুরি

লাল আপেল আর সবুজ আপেলের মধ্যে পুষ্টিগত দিক থেকে আরও একটি বড় ফারাকের জায়গা হলো ভিটামিন এ। লাল আপেলের তুলনায় সবুজ আপেলে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ বেশি ভিটামিন এ আছে। ভিটামিন এ আমাদের চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান।

ভিটামিন এ ছাড়া লাল আপেল আর সবুজ আপেলের পুষ্টিগুণ প্রায় কাছাকাছি। বাকি পার্থক্যগুলো সামান্য। আপেল হৃদযন্ত্র ও যকৃতের সমস্যাকে দূরে রাখে। পাশাপাশি, ফাইবার ও ক্যালোরি কম থাকায় ওজন কমাতেও কাজে আসতে পারে আপেল।