২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৩

ইউটিউবে ভিডিও দেখে রকেট তৈরি করলেন চীনা তরুণ

ইউটিউবে ভিডিও দেখে রকেট তৈরি করেছেন চীনের তরুণ ঝাং শিজিয়ে  © সংগৃহীত

চীনের হুনান প্রদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামের ১৮ বছরের এক তরুণ ঝাং শিজিয়ে। ইউটিউবে ভিডিও দেখে আস্ত একটি রকেট তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। নিজের হাতে যন্ত্রটি তৈরি করে তিনি এখন অনেকের জন্যই অনুপ্রেরণা। অনলাইনে রকেট সংক্রান্ত ডিআইওয়াই ভিডিও দেখে সস্তা উপকরণ দিয়েই বানিয়ে ফেলেছেন রকেটটি।  

রকেট বানানোর প্রতি তার এই আগ্রহ তৈরি হয় মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকেই। বাবার সঙ্গে একটি রকেট উৎক্ষেপণের সরাসরি সম্প্রচার দেখে তার মধ্যে এই আগ্রহের সৃষ্টি হয়। রকেট নির্মাণের ব্যাপারে আগে থেকে কিছুই জানতেন না ঝা। এরপর অনলাইনে রকেট সংক্রান্ত নানা ভিডিও দেখে, তিনি একের পর এক রকেট পরীক্ষা চালাতে থাকেন, কখনো সফল হন, কখনো ব্যর্থ। 

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, ইন্টারনেট ঝাংয়ের আগ্রহ গড়ে তুলতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে তার গ্রামের স্কুলে সীমিত শিক্ষাসামগ্রী থাকার পরিপ্রেক্ষিতে। নিজের হাতের কাছে থাকা প্রতিটি উপকরণ কাজে লাগিয়ে ধীরে ধীরে তিনি নিজের দক্ষতা বাড়িয়েছেন। 

প্রথমদিকে, তিনি নিজের পরিবারের শূকরের খামার থেকে নাইট্রেট সংগ্রহ করে রান্নাঘরে চিনি ও পানির সঙ্গে মিশিয়ে জ্বালানি তৈরি করার চেষ্টা করেন। তবে তা যথেষ্ঠ বিশুদ্ধ না হওয়াই, বিদ্যালয়ে শেখানো ফিলট্রেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে সার থেকে আরও বিশুদ্ধ জ্বালানি তৈরি করতে সক্ষম হন।

আরও পড়ুন: দুপাশের কথাসহ হোয়াটসঅ্যাপে কল রেকর্ডিং করবেন যেভাবে

পিভিসি টিউব এবং সিমেন্টের মতো সাশ্রয়ী মূল্যের উপকরণ ব্যবহার করে রকেট ইঞ্জিন নির্মাণের চেষ্টা করেছিলেন ঝাং, যদিও এসব প্রচেষ্টা সফল হয়নি। তবে তিনি থেমে থাকেননি। ২০২৩ সালের জুন মাসে তার জন্মদিনে, তিনি তার পিতাকে এবং সহপাঠীদের আমন্ত্রণ জানান নিজের বানানো প্রথম রকেট পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ দেখানোর জন্য। বৃষ্টির কারণে প্রথম প্রচেষ্টা তিনি ব্যর্থ হলেও, পরের দিন তিনি সফলভাবে রকেট উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হন।

এভাবে শতাধিকবার চেষ্টার পর তিনি চার ধরনের ইঞ্জিন, একাধিক এক-স্তরের রকেট এবং একটি দুই-স্তরের রকেট তৈরি করেছেন। তার এই রকেট ৪০০ মিটার উচ্চতায় পাঠাতে তিনি সক্ষম হয়েছেন। ঝাংয়ের পরিবার তার এ স্বপ্নকে সব সময় সমর্থন করে এসেছে। তার বাবা হুনানের রাজধানী চাংশায় রাইড-শেয়ারিং ড্রাইভার হিসেবে কাজ করেন, আর তার মা অন্য একটি শহরে ন্যানি হিসেবে কর্মরত।

সম্প্রতি তিনি আনন্দের সঙ্গে জানান যে, তিনি চীনের শীর্ষস্থানীয় মহাকাশ বিষয়ক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একটি, শেনইয়াং অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি-তে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।