শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেনা ক্যাম্প, ব্যাহত শিক্ষা কার্যক্রম
ঝিনাইদহের কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে যাওয়ায় শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করতে পারেনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়াসহ বিভিন্ন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হলেও মেলেনি সমাধান।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশে জরুরি অবস্থা জারি হলে ঝিনাইদহ জেলার এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের নিয়মিত গতিতে ফিরলেও এখনো বন্ধ আছে এই প্রতিষ্ঠানের পাঠদান।
ইন্সটিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহদুলুল হাসান বলেন, আন্দোলনের পর থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে আছে। ভর্তিও হতে হয়েছে পাশের একটা কলেজের রুমে। সামনে আমাদের মিডটার্ম, এখনো কিছু পড়ানোও হয়নি। অন্যান্য সব জায়গায় ক্লাস চললেও আমাদেরটাই শুধু বন্ধ।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ সুব্রত কুমার চক্রবর্তী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। প্রায় ২ মাস বন্ধ আছে আমাদের কার্যক্রম। আমরা ডিজি, ডিরেক্টর, ডিসিকে জানিয়েছি। ৩ বার ডিসির সাথে দেখা করেছি, চিঠিও দিয়েছি এবং তিনি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কারিগরির এসএসসি ও দাখিলের রেজিস্ট্রেশনের সময় ফের বাড়ল
ডিপ্লোমা এডুকেশনের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ১৬ টি ইন্সটিটিউট সমন্বয়ে সহযোগিতা করে থাকি। বাকি ক্যাম্পাসগুলোতে এক মাসের বেশিদিন ধরে ক্লাস শুরু হলেও এখানে হয় নি। মাঝে ওদের প্র্যাক্টিকাল পরীক্ষাও হয়েছে, সেগুলোও ওরা কীভাবে চালিয়েছে গেছে আমি জানি না। ওদের নতুন সেমিস্টারের ভর্তি কার্যক্রমও পাশের কোনো প্রতিষ্ঠানে গিয়ে করতে হয়েছে বলে শুনেছি। ডিজি স্যারের সহযোগিতা নিয়ে মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও তারা কোনো গুরুত্ব দেন নি। তারা ক্যাম্প করার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেই বেছে নিচ্ছেন।
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল বলেন, আমি এখানে যোগদান করেছি ১২ (সেপ্টেম্বর) তারিখে। আমার কাছে তারা গত এক সপ্তাহ আগে এসেছেন। সাথে সাথেই দায়িত্ব দিয়েছি এই বিষয়টা দেখতে আর এটা অলমোস্ট সেটেলল্ড। আমার সাথে প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের কথা হয়েছে। আশা করছি রবি-সোমবারের মধ্যেই তাদের ক্লাস শুরু হয়ে যাবে।
আবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই কেন সেনা ক্যাম্প যাবে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, বিষয়টা আসলে ক্যাম্প যাচ্ছে না। এটা তো আসলে প্রশাসনিক একটা কার্যক্রম। প্রতিষ্ঠানের প্রধান যারা আছেন তাদের নিয়ে বসেছি। এখন তো একটা বিশেষ সময় যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। তো প্রশাসনিক কার্যক্রম অনুযায়ী যেভাবে একোমোডেট করা যায় সেভাবেই করা হবে।
আরও পড়ুন: কারিগরি শিক্ষায় দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান শিক্ষা উপদেষ্টার
ঝিনাইদহ সেনা ক্যাম্পের মুখ্য প্রশিক্ষক ড. হুমায়ুন কবিরের সাথে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবারও এটা নিয়ে মিটিং হয়েছে। আমাদের সম্ভবত কাল-পরশুর মধ্যে ভেন্যু দিবে। খামার বাড়িতে একটা মিটিং-এ ও এটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে আমি যতদূর জানি। আমরা চেষ্টা করছি ওদের ক্যাম্পাসে ফেরানোর জন্য, আমরাও সহযোগিতাই করতে চাই। আশা করছি দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে।