৪৪ দিন পর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন স্থগিত

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের 
 অবস্থান ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের অবস্থান ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি।  © টিডিসি ফটো

এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে সেসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে টানা ৪৪ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। আজ রবিবার (৯ এপ্রিল) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের সদস্য সচিব মো. জসিম উদ্দিন আহমেদ। 

তিনি বলেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের অবস্থান ও প্রতীকী অনশন কর্মসূচি মূলতবি করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিকেন্দ্রীকরণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান ও প্রতীকী অনশন পালন করে আসছি। পাশাপাশি গত ১২ থেকে ১৬ মার্চ এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে তিন ঘণ্টার কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। 

জসিম উদ্দিন বলেন, প্রেসক্লাবের সামনে ধুলা, বৃষ্টি ও কাদার মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দীর্ঘদিন লাগাতার অবস্থান করে সহস্রাধিক শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন। দুইজন শিক্ষকও ইতোমধ্যে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। জোটভুক্ত সংগঠনসমূহের প্রায় সকল শীর্ষ নেতৃবৃন্দ অসুস্থ হয়ে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, বিরোধীদলীয় উপনেতা জি. এম. কাদের আমাদের কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেছেন। আমাদের যৌক্তিক দাবি মহান সংসদে জোড়ালোভাবে উপস্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়াও মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, শিরিন আক্তার এমপিসহ অনেকেই আমাদের কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে সংহতি প্রকাশ করেছেন ও মহান জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস আগামী বাজেটে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষনা থাকবে। গত কয়েকদিন ধরে জোটভুক্ত সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন ও কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষক কর্মচারিগণের সাথে আলোচনা করে কর্মসূচি বিকেন্দ্রীকরণ ও কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেন। এরই প্রেক্ষিতে ভার্চুয়ালী গণমিটিং ও আজকে উপস্থিত শিক্ষক-কর্মচারিগণের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে এবং মাননীয় বিরোধীদলীয় উপনেতার অনুরোধের প্রেক্ষিতে কর্মসূচি জেলা উপজেলা পর্যায়ে বিকেন্দ্রীকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেজন্য আমাদের কর্মসূচীতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

সেগুলো হলো-

১. আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর প্রথম কার্যদিবসে শিক্ষক-কর্মচারিগণের কালো ব্যাচ ধারণ ও এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে জাতীয়করণের সুবিধা সম্বলিত ব্যানার টানানো। (ব্যানারের নমুনা কেন্দ্রীয় ভাবে দেওয়া হবে)।

২. ২ মে থেকে ১৯ মে পর্যন্ত জাতীয়করণের সুবিধাভোগী অংশীজনদের সাথে মতবিনিয় ও তাঁদের সাথে নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্যের সাথে আলোচনা ও স্মারকলিপি প্রদান।

৩. ২০ মে শনিবার জেলা বা উপজেলার শহীদ মিনার বা প্রেসক্লাবের সামনে এবং ২৭ মে শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা জেলা ও মহানগরের জাতীয়করণের সুবিধাভোগী অংশীজনদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি।

একইসাথে আসন্ন বাজেট বক্তৃতায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ বা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিদের বৈষম্য নিরসনে কোন প্রস্তাবনা না থাকলে জোট নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ