১১ মে ২০২২, ২০:১৩

নানা-নানির অনুপ্রেরণায় ম্যাজিস্ট্রেট বাউল শিল্পীর মেয়ে মিতা

বাবা মোতাহার মন্ডল, আসমা আক্তার মিতা, ভাই ফয়সাল হোসেন রিকো ও মা ঝর্ণা খাতুন  © সংগৃহীত

সদ্য প্রকাশিত ৪০তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন সাতক্ষীরার মেয়ে আসমা আক্তার মিতা। এ ক্যাডারে তার অবস্থান ৬০তম। তবে মিতার বিসিএস জয় কোনো সহজ ব্যাপার ছিল না। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে এ পথ পাড়ি দিয়েছেন মিতা।

মিতা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার কেরেলকাতা ইউনিয়নের কিসমত ইলিশপুর গ্রামের মোতাহার হোসেন মণ্ডল ও ঝর্ণা খাতুন দম্পতির সন্তান। মিতার বাবা একজন বাউল শিল্পী ও মা পেশায় গৃহিণী।

মিতা ২০১০ সালে কেকেইপি সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫, ২০১২ সালে কাজিরহাট ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতে একই বিভাগে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগে।

কাজীরহাট ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এসএম শহিদুল ইসলাম বলেন, মিতার বাব বাউল শিল্পী। দেশের বিভিন্ন স্থানের ফকির মেলায় গান করে থাকেন তিনি। এইচএসসি পরীক্ষায় এ কলেজ থেকে ১২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল, তাদের একজন মিতা। সরকারি উপবৃত্তি-স্কলারশিপ পেয়েছিল মিতা, যেটি তার লেখাপড়ার খরচ বহনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল।

মিতার বাবা মোতাহার হোসেন জানান, অভাবের সংসার। কষ্ট হলেও মেয়েদেরকে লেখাপড়া করিয়েছি। আল্লাহর রহমত ও সবার দোয়াতেই মেয়ের এ সফলতা। মেয়ে যেন দেশ ও জনগণের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, এজন্য দোয়া চাই।

আরও পড়ুন : প্রথম বিসিএসেই কাস্টমস ক্যাডারে খুবির লোপা সাহা

স্থানীয় ইউপি সদস্য মুজিবুর রহমান মজি জানান, মিতা অত্যন্ত কোমল স্বভাবের ও পরিশ্রমী মেধাবী শিক্ষার্থী। তার এ কৃতিত্বে গ্রামের প্রতিটি মানুষ খুশি।

আসমা আক্তার মিতা জানান, আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে এ সফলতা অর্জন করেছি। নানা-নানির কঠোর পরিশ্রম ও অনুপ্রেরণায় ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্নটা পূরণ হয়েছে। তারা এখন আর বেঁচে নেই। বেঁচে থাকলে নানা-নানির মতো খুশি আর কেউ হতো না।

মিতার বড় বোন রেশমা আক্তার লতা ২০১৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন। বর্তমানে চাকরি খুঁজছেন তিনি। অভাবের কারণে একমাত্র ভাই ফয়সাল হোসেন রিকো দশম শ্রেণীর পর আর পড়াশোনা করতে পারেনি। বর্তমানে একটি প্রতিষ্ঠানে অল্প বেতনে কর্মরত রয়েছেন।