বিশ্বাসই হচ্ছিল না সারাদেশে দ্বিতীয় হয়েছি
মো. আনোয়ারুল কবির মিটুল। বাবা মায়ের তৃতীয় সন্তান। বাবা নুরুল ইসলাম ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু প্রিয়নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও মা নুরুন্নাহার বেগম গৃহিণী। সদ্য প্রকাশিত ৪০তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন মিটুল।
মিটুল তিন ভাইয়ের মধ্যে ছোট। ২০০৭ সালে হরিণাকুন্ডু উপজেলার প্রিয়নাথ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি’তে গোল্ডেন জিপিএ-৫ ও ২০০৯ সালে নটর ডেম কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন মিটুল।
মিটুলের বড়ভাই খাইরুল ইসলাম পেশায় জজ। কর্মরত রয়েছেন যশোরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। আরেক ভাই পেশায় পেশকার।
মিটুলের বাবা নুরুল ইসলাম জানান, অনেক শিক্ষার্থীকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। এদের অনেকেই এখন দেশসেরা ক্যাডার অফিসার। সবসময় তিনি চাইতেন তার নিজের সন্তানেরাও সুশিক্ষায় গড়ে উঠবে। তার স্বপ্ন এখন অনেকটা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বড় ছেলে জজ, মেজো ছেলে আদালতের পেশকার এবং ছোট ছেলে এখন পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। ছেলেরা সমাজ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করবেন, এমনটাই তার প্রত্যাশা।
বড় ভাই খাইরুল ইসলাম জানান, মিটুল এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলায় সেরা ফল পেয়েছিল, পরে তাকে নটর ডেম কলেজে ভর্তি করিয়ে দেই। মিটুল তার প্রথম বিসিএসে উত্তীর্ণ হতে পারেনি। দ্বিতীয়বারও তার ভাগ্য সহায় ছিল না। তৃতীয়বারে ৪০তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ পেয়েছে মিটুল। ছোট ভাইয়ের এমন সফলতায় নিজের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন : স্বল্প আলোয় ক্যাপসিকাম চাষে খুবি শিক্ষার্থীর সাফল্য
মো মিটুল জানান, বাবা ও বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় আমি এখন সফল। ২০১৫ সালে ৩৬তম বিসিএসে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেছিলাম। এরপর ২০১৭ সালে ৩৮তম বিসিএসে, তখনও ভালো কিছু হয়নি। তবে হাল ছেড়ে দিইনি। পরে ৪০তম বিসিএসে অংশ নিই। এবার আমার কাঙ্ক্ষিত ফল এসেছে।
মিটুল আরও বলেন, আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে আমি সারাদেশে দ্বিতীয় হয়েছি। বাবার মুখ উজ্জ্বল করতে পেরেছি। এখন একজন মানবিক পুলিশ হিসেবে কাজ করতে চাই। সকলের নিকটে দোয়া প্রার্থী।