‘উইনার অথবা লুজার’ নীতিতে বিসিএস ক্যাডার রাফাক রায়ান
কর্মজীবনে বাবা ছিলেন প্রচণ্ড পরিশ্রমী। অনেক কষ্ট করেছেন। বাবাকে দেখে জেদ চেপে বসে রাফাক রায়ানের। ইচ্ছা ছিল বাবার কষ্ট দূর করার জন্য সফলভাবে কিছু করার। এরপরই ‘উইনার অথবা লুজার’ নীতিতে বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। সব ধাপ পেরিয়ে সফলও হয়েছেন তিনি।
৪১তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন রাফাক রায়ান। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থী ছিলেন। এসএসসি ও এইচএসসি উভয় পরীক্ষাতেই জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তার বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলায়।
এর আগে তার স্ত্রী তামান্না মুক্তাও সফলতা দেখিয়েছেন। ছিলেন বিভাগের সেরা। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে লেকচারার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছেন। তিনি মাস্টার্স শেষ করার আগেই শিক্ষকতা শুরু করেন। রাফাকের মতো তামান্নাও উভয় পরীক্ষায় পেয়েছেন জিপিএ-৫।
রায়ান বলছিলেন, করোনার আঘাতে সারাবিশ্ব যখন থমকে গিয়েছিল, তখন আমাদের প্রণয়ের যাত্রা হয়। ভার্সিটিতে সে আমার তিন ব্যাচ জুনিয়র ও ফ্যাকাল্টিতে টপার ছিল। আর আমি ছিলাম ব্যাকবেঞ্চার। ফিউচার ক্যারিয়ার নিয়ে ছিলাম ঘোর অমনিশায়। টপার হওয়ায় তার ক্যারিয়ার মোটামুটি নিশ্চিত ছিল যে, ভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে জয়েন করবে হয়তো।
শুরু থেকেই বিসিএসের নেশায় বুদ হয়ে ছিলেন রায়ান। বিসিএস ছাড়া অন্য কোনও চাকরির প্রতি মোহও ছিল না। হয় ‘উইনার অথবা লুজার’ এরকম ডু অর ডাই ম্যাচে লাইফের গোল সেট করেছিলেন। পারিবারিক অনেক সীমাবদ্ধতা থাকার পরও বাবা-মায়ের সাপোর্ট আর ভালোবাসার মানুষের কারণে সফল হতে পেরেছেন।
আরো পড়ুন: কোচিং কোথায় করেছেন— যা বললেন মেডিকেল প্রথম মুনতাকা
গত বছরের ৩ আগস্ট বিসিএসের ফল পান জানিয়ে রায়ান বলেন, সত্যি বলতে ৩ আগস্টের আগের আমি আর পরের আমির মধ্যে অনেক ডিফারেন্স। একটা রেজাল্ট বয়ে আনে আমার আইডেন্টিটি আর অনেক সম্মান। ভালোবাসার মানুষকে নিজের করেও পেয়েছি একই বছরের নভেম্বর মাসে। তারপর সে নিজেও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে লেকচারার হিসেবে জয়েন করে।
বিসিএসের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, নিজের লক্ষ্যের প্রতি ফোকাস রেখে নিয়মিত পড়াশোনা, জেদ, আত্মবিশ্বাস ও সৃষ্টিকর্তার দয়ায় সব অসম্ভবকে জয় করা সম্ভব। আর এসবের বলেই আজ আমরা সফল জুটি।