পর্তুগালে উচ্চশিক্ষা পেতে..
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:০১ PM , আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৭:৫৩ PM
দেশের শিক্ষিত তরুণদের অনেকেরই স্বপ্ন থাকে সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ করা। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা বেশিরভাগ সময়ই কোন দেশে পড়বেন তা নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন, শিক্ষার মান এবং সাধ্যের মধ্যে বাৎসরিক টিউশন ফি; এ বিষয়গুলো উচ্চ শিক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। উন্নত শিক্ষার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আকাঙ্খার একটি বড় অংশ জুড়ে থাকে পড়াশোনার পাশাপাশি আয় এবং স্থায়ী নাগরিকত্বের সুবিধা লাভ।
এসব বিষয় বিবেচনায় আনলে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য পর্তুগাল হতে পারে একটি পছন্দসই দেশ। অর্থনৈতিক দিক থেকে ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় পর্তুগাল কিছুটা অনুন্নত হলেও শিক্ষাক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিশ্বে দেশটির সুনাম রয়েছে। পর্তুগালে রয়েছে অনেক পুরাতন ও ভাল মানের বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ করে আপনি সহজেই বিশ্ব বাজারে নিজেকে উপযোগী করে তুলতে পারেন।
কি পড়বেন?
পর্তুগালের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনার্স, মাস্টার্স, পোষ্ট-গ্রাজুয়েশন ও পিএইচডি ছাড়াও প্রায় সকল বিষয়ে পড়াশোনা করা যায়।
কখন আবেদন করবেন?
এখানে সাধারণত বছরে ০২টি সেশনে আবেদনের সুযোগ আছে। আবেদনের সময়কাল নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এবং এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেব্রুয়ারিতে স্বল্পসংখ্যক বিষয়ে শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে।
কত টাকা খরচ?
দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক ৯শ’ ইউরো থেকে শুরু করে ৬ হাজার পর্যন্ত টিউশন ফি দিতে হয়। থাকা খাওয়া ও যাতায়াতে জন প্রতি ব্যয় হতে পারে ৪শ’ থেকে ৫শ’ ইউরো পর্যন্ত।
আবেদনের জন্য যা যা লাগবে
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পোর্টালে আবেদনপত্র পূরণ করে তা নির্দিষ্ট সময়ে জমা দিতে হবে। আবেদন ফি লাগতে পারে ৫০ থেকে ৬০ ইউরো। আবেদন ফি প্রদানের রশিদ, সর্বশেষ একাডেমিক সার্টিফিকেটের স্ক্যান কপি, ইউরোপাস সিভি, পাসপোর্টের স্ক্যান কপি, আবেদনকারীর ছবি, রিকোমেনডেসান লেটার (অপশনাল) এবং মটিভেসান লেটার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন পোর্টালে বা ই-মেইলে পাঠাতে হবে। যদি আপনি সিলেক্টেড হন তাহলে আপনাকে টোটাল টিউসান ফি’র নির্দিষ্ট অংশ অগ্রিম পরিশোধ করতে হবে।
খণ্ডকালীন চাকরি
পর্তুগালে রয়েছে খণ্ডকালীন চাকরির সুবিধা। পড়াশোনার পাশাপাশি ২০ ঘণ্টা কাজের অনুমতি পাবেন। ভেকেশনে ফুল টাইম কাজের অনুমতি পাবেন। যা আপনার যাবতীয় প্রয়োজন মেটাতে সহায়তা করবে।
স্থায়ী নাগরিকত্ব
পর্তুগালে আপনি খুব কম সময়ে (২-৪ বছর), অল্প টাকায় পার্মানেন্ট রেসিডেন্টশিপ অর্জন করতে পারবেন। আর যারা পর্তুগালে বৈধভাবে পাঁচ বছর বা তার বেশি সময় ধরে বসবাস করেন এবং ট্যাক্স অথরিটি ও জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা বা আঞ্চলিক স্বাস্থ্য পরিষেবাগুলোতে নিবন্ধিত হয়েছেন এবং পর্তুগিজ ভাষায় তাদের দক্ষতার প্রমাণ করতে পারেন তাহলে তারা পাঁচ বছরে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ সুবিধা
পর্তুগালে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ। যা বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারে। যেমনঃ Erasmus mundus Scholarship, FCT Scholarship & University Internal Scholarship এর জন্য আবেদন করতে পারে। তবে মূল চ্যালেঞ্জ হলো- ভাষা এবং বাংলাদেশে পর্তুগালের কোন দূতাবাস নেই। ভিসা পেতে ভারতে যেতে হয় বলে আমাদের শিক্ষার্থীদের ভিসা লাভের হারও অনেক কম।
পর্তুগালে ইউনিভার্সিটি অব লুজোফোনাতে পিএইচডি করছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মো. নুর আলম মিস্ত্রী। পাশাপাশি খন্ডকালীণ শিক্ষক হিসাবে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার এন্ড আরবানিজম বিভাগ। পড়াশোনার জন্যে পর্তুগালকে বেছে নেয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পর্তুগিজ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর টিউশন ফি তুলনামূলকভাবে অনেক কম। আর বিশ্বমানের শিক্ষা দিয়ে থাকে; যা পৃথিবীর সকল দেশে গ্রহণযোগ্য। এছাড়াও পর্তুগালে পড়াশুনা শেষ করে সহজে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ নেওয়া যায়।
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য পর্তুগালে পড়াশোনা করার সম্ভাবনা নিয়ে তিনি বলেন, দেশটিতে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য অপার সম্ভাবনা আছে। এখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স এবং পিএইচডি পর্যায়ে অনেক বিষয় ইংরেজীতে পাঠদান করে এবং অনার্স পর্যায়ে স্বল্প পরিসরে ইংরেজি ও বেশির ভাগ পর্তুগিজ ভাষায় পড়ানো হয়। কিন্তু অনেকে এখনো বিষয়টি অবগত নয় তাই এখানে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী অনেক কম।