নিপীড়নকারীরা ছাত্রলীগ কর্মী, দাবি তাদের নিজেদেরও
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে হেনস্তার ঘটনায় চার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা নিজেদের শাখা ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে দাবি করলেও তাদের দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ছাত্রলীগ।
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী অভিযো তুলেছিলেন। এমনকি তাদের মধ্যে একজন চবির বগিভিত্তিক ‘সিএফসি’ গ্রুপের কর্মী বলেও অভিযোগ উঠেছিল। সিএফসি গ্রুপের কোনো কমিটি না থাকলেও এক সময় এই গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি।
এর গত রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটািনিক্যাল গার্ডেনের ভেতরে ছাত্রীকে হেনস্তা করেন ছয় যুবক। এই ঘটনায় গত বুধবার হাটহাজারী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী তরুণী। মামলা দায়েরের পর চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব। সম্মেলনে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ‘‘গ্রেপ্তারকৃতরা নিজেরা ছাত্রলীগে যুক্ত বলে দাবি করেছেন। তবে তাদের কোনো পদ-পদবি নেই।’’
আরও পড়ুন: ছাত্রী নিপীড়নকারী ২ ছাত্র আজীবন বহিস্কৃত ও নিষিদ্ধ
তিনি আরও বলেন, “আজিম নিজেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতির অনুসারী ও অন্যরা অপর পক্ষের বলে দাবি করেছেন। যেহেতু তাদের কোনো পদ-পদবি নেই, তাদের তাদের আমরা কোনো দলের কর্মী বলতে পারি না।”
এদিকে নিপীড়নের ঘটনায় গ্রেপ্তার আজিমের সাথে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের ছবি ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও এসব ছবির বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন রুবেল। এমনকি আজিম তার গ্রুপের কর্মী নয় বলেও দাবি করেছেন তিনি।
জানতে চাইলে রেজাউল হক রুবেল বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত আজিম আমার অনুসারী না। সে সিএফসি গ্রুপের অনুসারী।”
আরও পড়ুন: ‘আমি একা ধরতে পারলে পুলিশ কেন পারবে না’: জবি ছাত্রী
আজিমের সঙ্গে ছবি তোলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পর অনেকেই আমার সঙ্গে ছবি তুলেছেন। আমার সাথে যদি কেউ ছবি তুলতে আসে তখন তো আমি তাকে মানা করতে পারি না।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর জমা দেওয়া অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের সংলগ্ন এলাকা (হতামার মোড়) থেকে ওই ছাত্রী তার বন্ধুকে নিয়ে হলে ফিরছিলেন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে পাঁচজন যুবক এসে তাদের বোটানিক্যাল গার্ডেনের পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়।
অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী জানান, ‘আমাকে এবং আমার বন্ধুকে বিনা কারণে অযাচিতভাবে মারধর করে বোটানিক্যাল গার্ডেনের পেছেনে ঝোপঝাড় নির্জন এলাকায় নিয়ে যায় এবং আমার গায়ে কাপড় খুলে মোবাইল ফোনে ভিডিও করে এবং সেই ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কে যেতে চায়।’
ছাত্রীর অভিযোগ, বিষয়টিতে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করে এবং শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেয়। পরে সুবিধা করতে না পেরে ওই ছাত্রী এবং তার বন্ধুর মানিব্যাগ ও মোবাইল কেড়ে নিয়ে চলে যায় দুর্বৃত্তরা।