আত্মহত্যার আগে সুইসাইড নোটে যা লিখে গেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সাদাত
রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতা সাদাত মাহমুদ আত্মহত্যা করেছেন। ধানমন্ডি এলাকায় নিজেদের বাসায় তার লাশ পাওয়া যায়। করোনাকালে শিক্ষার্থীদের ৫০ শতাংশ টিউশন ফি মওকুফের আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ২০২০ সালের নভেম্বরে তাকেসহ দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ (ইউল্যাব)। একই বছরের সেপ্টেম্বরে বেইলি রোডে ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি আঁকার সময় সাদাতসহ দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করে রমনা থানা পুলিশ।
বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে তার নিজের রুমে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে সাদাতকে। লাশের পাশে পাওয়া সুইসাইড নোটে জানা গেছে, তিনি হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছেন। মূলত লেখাপড়ায় দীর্ঘ বিরতি ও ব্যক্তিগত হতাশা থেকেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলি গণমাধ্যমকে বলেন, বুধবার দুপুরে নিজ বাসায় আত্মহত্যার পর লাশের পাশে পাওয়া সুইসাইড নোট থেকে জানা গেছে, হতাশায় ভুগে আত্মহত্যা করেন তিনি। এ ব্যাপারে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অনিক রায় বলেন, ধানমন্ডিতে নিজ বাসায় সাদাত মাহমুদ আত্মহত্যা করেছেন। দুপুরে তাঁর পরিবার বিষয়টি বুঝতে পারে। সাদাত কীভাবে আত্মহত্যা করেছেন, তাঁর পরিবার এসব নিয়ে কিছু বলেনি। তাঁরাও কথা বলে বিরক্ত করতে চাননি।
অনিক রায় বলেন, ছোটবেলা থেকেই ট্রমাটিক অ্যাটাক হতো সাদাতের। দীর্ঘদিন চিকিৎসা চলছিল, জটিলতাগুলো কাটিয়েও উঠেছিলেন। তাই আত্মহত্যাটা খুবই অপ্রত্যাশিত। আন্দোলনের কারণে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল ইউল্যাব থেকে। এটা মানসিক চাপ তৈরি করেছিল।
আরো পড়ুন: শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যাকারী জিতু গ্রেপ্তার
বুধবার দুপুরে সাদাতের আত্মহত্যার বিষয়টি বুঝতে পারে পরিবার। তবে আত্মহত্যার কারণ জানা যায়নি। সাদাত ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বুধবার এশার নামাজের পর ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে সাদাতকে।
জানা গেছে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক দিন ধরে ভর্তির চেষ্টা করেও ভর্তি হতে পারছিলেন না তিনি। তাঁর পড়াশোনা আটকে যায়। সপ্তাহখানেক আগে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ক্লাস শুরু করেছিলেন। সর্বশেষ স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আদনান আজিজ চৌধুরী।