শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করা হবে: ছাত্র ইউনিয়ন

  © লোগো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার নিন্দা জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদ। সভাপতি মো. ফয়েজউল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল এক যৌথ বিবৃতিতে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমালোচনা করেন। একইসঙ্গে ছাত্রলীগ অবিলম্বে তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ না করলে এদেশের ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তাদের বিতাড়িত করা হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি। 

আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের মহড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে উতপ্ত অবস্থা বিরাজ করছে। গত পরশু সকালে ছাত্রদলের সমাবেশের পর থেকেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্রলীগের মহড়া দেখা যায়। একপর্যায়ে ছাত্রদল নেতা আতিক মুর্শেদের উপর হামলার খবর পাওয়া যায়। বস্তুত, কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের পর থেকেই ক্যাম্পাসে ছাত্রদল এবং ছাত্রলীগ পাল্টাপাল্টি মহড়া অব্যাহত রেখেছে। ছাত্রদল এবং ছাত্রলীগের মহড়া এবং ছাত্রদল নেতাদের উপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় ক্যাম্পাসের শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট হয়েছে। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্র ইউনিয়ন সর্বদাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ এবং ছাত্রসংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিতে তৎপর থেকেছে। কিন্তু আমরা দেখেছি যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তার ছাত্রসংগঠন তখন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লাঠিয়াল বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির আন্দোলনে হামলা করা, আন্দোলন দানা বাঁধতে না দেওয়ায় যেন তাদের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য। অথচ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের কোন আন্দোলনে তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময়ে আমরা ছাত্রদলের সন্ত্রাস দেখেছি, এখন আমরা ছাত্রলীগের সন্ত্রাস প্রত্যক্ষ করছি। বিগত ১৩ বছরে ছাত্রলীগে সন্ত্রাসে বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, মারাও গিয়েছেন কয়েকজন।

“সর্বশেষ আজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রলীগের হামলা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে বরাবরই ব্যর্থ। নামকাওয়াস্তে কয়েকমাসের জন্য বহিষ্কার করেই তারা দায় সারেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত এবং গণতান্ত্রিক সহাবস্থান নিশ্চিত করা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তব্য। তারা এ কাজে বরাবরই ব্যর্থতার পরিচয় দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রমিথিউস শহীদ মঈন হোসেন রাজু এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়েই ১৯৯২ সালে ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের গুলিতে শহীদ হন। শহীদ মঈন হোসেন রাজুর রক্তের শপথ নিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রেখেছে। ছাত্রলীগ অবিলম্বে তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ না করলে এদেশের ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তাদের বিতাড়িত করা হবে।”

নেতৃবৃন্দ হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন এবং শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসীদের রুখতে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র আন্দোলনের আহবান জানান।


সর্বশেষ সংবাদ