২৮ মার্চের হরতালে সমর্থন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের

সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলন  © টিডিসি ফটো

চলতি মাসের ২৮ তারিখ বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা অর্ধদিবস হরতালে সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট। আজ রবিবার (২০ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সমর্থন জানায় সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মো. ফয়েজ উল্লাহ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১১ মার্চ দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ ও মানুষকে বাঁচানোর দাবিতে ২৮ মার্চ বাম গণতান্ত্রিক জোটের দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতালের ডাকে আমরা প্রগতিশীল ছাত্র জোট সর্বাত্মক সমর্থন জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য যেমন চাল-ডাল-তেল-গ্যাসসহ অন্যান্য পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে আজ দেশের খেটে খাওয়া জনগণের নাজেহাল অবস্থা। মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রমজীবী পরিবারের জীবন ধারণ করাই হয়ে উঠেছে দুরূহ। বর্তমান সরকার তার পুরো শাসনামল জুড়েই নানান অজুহাতে এই মূল্যবৃদ্ধির আয়োজন করে তাকে জায়েজ করার চেষ্টা করেছে।

আরও পড়ুন- জাবি সম্পাদকের ভুলভাল বক্তব্যে ক্ষেপেছেন ছাত্রলীগ নেতারা 

"কখনও তারা বিশ্ববাজারের অজুহাত দেয় , কখনওবা বিরোধী দলের, কখনও নির্লজ্জের মত স্বীকার করে নেয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে তাদের কিছু করার নেই। এখন তারা দায় চাপাতে চাইছে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের ওপর। কিন্তু সত্যি কথা হল যুদ্ধ শুরুর বহু আগে থেকেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জাঁতাকলে মানুষ পিষ্ট হয়ে জীবন যাপন করছিল। করোনার সময় বহু মানুষ কাজ হারিয়ে সঞ্চয় খুইয়ে নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে।"

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিবেদন উল্লেখ করে ফয়েজ উল্লাহ বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ’র ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ‘ বৈশ্বিক মজুরি প্রতিবেদন : ২০২০-২১ এ বলা হয়েছে , বাংলাদেশই একমাত্র দেশ,যেখানে নিম্নতম মজুরি আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমার নিচে। মানুষের আয় কমার সাথেই যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি। আমদানিকারক , মিলার , চাতালের মালিক , আড়তদার , মজুতদার , ফড়িয়া মধ্যস্বত্ত্বভোগী সিণ্ডিকেটসমূহের সাথে সরকারের অশুভ আতাতের কারণে প্রায় প্রতিটি খাদ্যপণ্যের দাম আজ আকাশচুম্বী।

"খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে কেবল গত ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১০ % , গ্যাসের দাম বেড়েছে ১৪৪ % , ডিজেলের দাম বেড়েছে ৮২ % , আর পানির দাম বেড়েছে ২৬৪ %। এর মধ্যে আবার চরম স্বেচ্ছাচারী পন্থায় পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে ৬০% , গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবনা রয়েছে ১১৭ % আর তেলের দাম বৃদ্ধির কোন সীমারেখা নেই। এই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি শিক্ষার্থীদের জীবনকেও করে তুলেছে দুর্বিসহ। একদিকে কমছে অভিভাবকদের আয়, অন্যদিকে বাড়ছে ডাইনিং, ক্যান্টিন, হোটেল - মুদি দোকানে খাবারের দাম। ফলে বহু শিক্ষার্থীরা এটাকে সমন্বয় করছেন খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে।"

এসময় হরতাল সফল করতে ২১ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ২২ মার্চ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ২৪ মার্চ পলাশীতে প্রচারপত্র বিলি ও গণসংযোগ এবং ২৭ মার্চ সন্ধ্যা ৬টায় শাহবাগ চত্বরে মশাল মিছিল কর্মসূচির ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ