শহীদ মনিরুজ্জামান বাদলের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২২, ০১:২৭ PM , আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২২, ০২:০৪ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ মনিরুজ্জামান বাদলের ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
রবিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুননাহার হল সংলগ্ন 'শহীদ মনিরুজ্জামান বাদলের স্মৃতিস্তম্ভে ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়ের নেতৃত্বে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগের নতুন ৩ বিচারপতির শপথ গ্রহণ
পুষ্পার্পণ শেষে শহীদ বাদলের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয়, হল ও বিভিন্ন ইউনিটের সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহীদ বাদলের আত্মত্যাগ ও রাজনৈতিক জীবন নিয়ে সংক্ষিপ্ত এক স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, ‘বাদল ভাইয়ের রক্ত কখনো বৃথা যাবেনা। কারণ বাদল ভাইয়েরা যুগে যুগে থাকবেই। সংগঠনের প্রতি তাদের যে আত্মত্যাগ ও ভালোবাসা সেই ভালোবাসা কখনোই মানুষের হৃদয় থেকে মুছে যাবে না। যতবার হত্যা করো দারুণ সূর্য হয়ে উদিত হব, লিখব নতুন ইতিহাস। হত্যা করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে কখনো পেছনে রাখা যাবে না। কারণ, বাংলাদেশ যতদিন থাকবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শও ততদিন থাকবে। মূলত, যারা বাদল ভাইকে হত্যা করেছিল তারা হয়তো মনে করেছিল বাদল ভাই থাকলে তাদের স্বার্থে আঘাত হানবে। যাহোক, বাদল ভাইয়ের যে নেতৃত্ব এবং যেভাবে তিনি সংগঠনকে সুসংগঠিত করে রাখতেন, তা থেকে আমাদের শিক্ষা নিয়ে সামনের পথে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা বাদল ভাইয়ের হত্যার বিচার চেয়েছি, আশা করবো বিচার হবেও।’
আরও পড়ুন: প্রয়োজনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘মনিরুজ্জামান বাদল ভাইয়ের যে ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং মুজিব আদর্শের চর্চা সেটি হয়তো আমরা ভুলে গিয়েছি। ছাত্রলীগের নেতা হলেই আমাদের বিলাসবহুল গাড়িতে চড়তে হয়। কর্মীদের কোন খোঁজখবর রাখি না। কর্মীরা অসুস্থ হলে আমরা দেখারও সময় পাইনা। বিভিন্নভাবে বিলাসিতায় আমরা গা ভাসিয়ে দেই। কিন্তু তখনকার আমলে মনিরুজ্জামান বাদল ভাইয়ের মত যে সমস্ত ছাত্রনেতা ছিলেন তারা কর্মীদের খোঁজখবর রাখতেন, বিপদাপদে ছুটে যেতেন। তিনি তার কর্মীবান্ধব নীতি এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি একনিষ্ঠতার কারণেই হত্যার শিকার হয়েছেন বলে আমরা জানি। কারণ, তিনি নেত্রীর প্রশ্নে আপসহীন ছিলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতি আপষহীন ছিলেন। তিনি আপোষহীন ভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে সংগঠিত করে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এটিই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল এবং যার জন্য তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
মনিরুজ্জামান বাদলের সহধর্মিণী শামীম আরা বাদল বলেন, ‘জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি, মা চলে গেছে, বাবা চলে গেছে। কিন্তু এখনো বাদল হত্যার বিচার হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে অনুষ্ঠান চলাকালে ডেকে নিয়ে বাদলকে হত্যা করা হয়েছিল। দল ক্ষমতায় এক যুগ ধরে। কিন্তু কেন তার হত্যার বিচার হচ্ছেনা এই প্রশ্ন যেমন আপনাদের, ঠিক তেমনি আমারও। এখন জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছি। জানিনা তার হত্যার বিচার দেখে যেতে পারবো কিনা। জানিনা এ ব্যাপারে দল কার্যকরী কোন ব্যবস্থা নিয়েছে কিনা বা নিচ্ছে কিনা। আমি আশা করব এ ব্যাপারে যেন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’
উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালের ৯ জানুয়ারি শামসুন নাহার হলের সামনে মনিরুজ্জামান বাদল আততায়ীর গুলিতে নিহত হন। তার স্মৃতি ধরে রাখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল সংলগ্ন শামসুন নাহার হলের সামনে 'শহীদ মনিরুজ্জামান বাদল স্মৃতিস্তম্ভ' নির্মাণ করা হয়।