ছেলে ছাত্রলীগ করে, জানত না অনিকের পরিবার

অনিক সরকার
অনিক সরকার  © ফাইল ছবি

বাবা আনোয়ার হোসেন সরকার পেশায় ব্যবসায়ী। মা শাহিদা বেগম গৃহিণী। মধ্যবিত্ত পরিবারে কড়া শাসনেই বড় হয়েছেন অনিক সরকার। পড়াশোনায় ছিলেন বেশ মেধাবী। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করেন। এরপর ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)। সেখানেই জড়িয়ে পড়েন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে।

বলছিলাম বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ফাঁসির আসামি অনিক সরকারের কথা। আজ বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে অনিকসহ ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দিয়েছেন আদালত। শৈশব থেকেই শান্তশিষ্ট ও মেধাবী এই ছেলে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে জড়াবে তা মানতে পারছেন না অনিকের পরিবার ও তার প্রতিবেশীরা।

অনিকের জন্ম রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার বড়াইকুড়ি গ্রামে। মোহনপুর কেজি স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন অনিক। অষ্টম শ্রেণিতেও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পান। ২০১৩ সালে একই বিদ্যালয় হতে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি শেষ করেন। 

অনিকের পরিবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। তার চাচা বেলাল হোসেন রাজশাহী জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি। অনিকের মামা আল মমিন শাহ গাবরু বকশিমাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং মোহনপুর উপজেলা শাখার যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।

ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হওয়ার পর থেকে ছাত্র রাজনীতিতে অনিকের সম্পৃক্ততা শুরু হয়। তবে নিজ এলাকায় তিনি ছাত্রলীগের উপজেলা শাখায় সক্রিয় ছিলেন না।

অনিকের বড় ভাই সোহেল সরকার বলেন, অনিক ছোটবেলা থেকেই শুধু পড়াশোনাই করত না, প্রচুর খেলাধুলাও করত। ও বুয়েটের সেফটি ক্লাবের সাথে যুক্ত। শেরেবাংলা হলে ওঠার আগে ও ঢাকায় আমার সাথে থাকত।

অনিকের রাজনীতিতে জড়িত থাকার বিষয়টি সোহেল জানতেন। কিন্তু বুয়েটের সিনিয়র ছাত্ররা তার ভাইকে রাজনীতিতে যোগ দিতে বাধ্য করেছেন বলে দাবি করেন সোহেল।

এমনকি অনিকের পরিবারও তাকে রাজনীতিতে আসতে নিষেধ করেছিল। সোহেল বলেন, অনিক হয়তো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির কারণে জড়িয়ে পড়েছিল।

অনিকের মামা মমিন জানান, সারা রাত জেগে থেকে দুই ভাইয়ের লেখাপড়ার তদারকি করতেন তাদের বোন। তিনি জানান, আমি কখনও অনিককে সন্ধ্যার পর বাইরে থাকতে দেখিনি। এমনকি ও যে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল, তা-ও আমি জানতাম না।


সর্বশেষ সংবাদ