ছাত্রলীগের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গণরুমের সৃষ্টি: আনু মুহাম্মদ
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:২৮ PM , আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৪৪ PM
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ‘গণরুম’ তৈরির পেছনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগকে দায়ী করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
আজ শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের (বিদ্রোহী অংশ) আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা ভাস্কর্যের সামনে 'সবকিছু খোলা রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ কেন?' শীর্ষক সর্বজন শুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) যে বাহিনী, ব্যক্তিগত বাহিনী, মাস্তান বাহিনী সেই বাহিনীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরান। সেই বাহিনী যদি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরে, এনএসএফের উত্তরসূরী ছাত্রলীগ, তাদের দাপট, তাদের সন্ত্রাস যদি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরে, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীরা ঠিকই পড়াশোনা করতে পারবে।
“গণরুমের মতো অবস্থা তো আছেই, গণরুমের অবস্থাটা এই সরকারের ছাত্রসংগঠনের কারণে হয়েছে। সেই গণরুম থেকেও আমরা মুক্তি পাব যদি আপনার (প্রধানমন্ত্রী) বাহিনীর দাপট, কমিশনভোগীদের দাপট বিশ্ববিদ্যালয়ে না থাকে।”
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাখাতে দেখা গেল যে বৈষম্যটা করোনার আগে ছিল সে বৈষম্যটা অনেক বেশি বেড়ে গেল। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক নামে আমাদের একটা সংগঠন আছে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আছেন, সেটাসহ বিভিন্ন পেশার মানুষদের পক্ষ থেকে গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের সুপারিশ সরকারের কাছে করেছি। আমরা সুপারিশ করেছি অনলাইন শিক্ষা যদি ঠিক মত কার্যকর করতে হয়, যদি যতটা সম্ভব ততটা শিক্ষার জায়গাটা তৈরি করতে হয়, সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হয় তাহলে কি কি করা উচিত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কি করা উচিত, ইউজিসির কি করা উচিত, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কি করা উচিত, সেগুলো কিন্তু কোনটাই করা হয়নি।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গত বছরের জুলাই মাস থেকে অনলাইন ক্লাস নিচ্ছি এবং সে অনুযায়ী অনলাইন পরীক্ষা হচ্ছে। অনলাইন ক্লাস এবং পরীক্ষার জন্য নানা রকম পদ্ধতি আমাদের বের করতে হচ্ছে, কিন্তু উপস্থিতি শতকরা ৩০-৪০-৫০ ভাগের বেশী হবে না। যারা ক্লাস করতে আগ্রহী তাদের নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে, মোবাইল কিংবা ল্যাপটপের সমস্যার কারণে তারা ক্লাস করতে পারেনি।
সবকিছু খোলা রেখে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার যৌক্তিকতা কী; অনলাইন ক্লাস-পরীক্ষার নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আদতে কী হচ্ছে; ইউনিসেফ-ইউনেস্কোর ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব শেষে বন্ধ, সবার আগে খোলা’ নীতি বাস্তবায়নে অনীহা কেন; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে বেতন ও সেশন ফি নেয়ার হেতু কী ও শতভাগ টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ আদৌ সরকারের আছে কি; এসব প্রশ্ন সামনে রেখে এই সর্বজন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের (বিদ্রোহী অংশ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজির আমিন জয়। সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈম এই আয়োজনের সঞ্চালনা করেন।
শুনানিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক তানজীম উদ্দীন খান, অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, গণস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী, শিক্ষা ও শিশু রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক রাখাল রাহাসহ বিভিন্ন বাম ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।