১৫২ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার দায় শিক্ষামন্ত্রীর: ছাত্র ইউনিয়ন

শাহবাগে ছাত্র ইউনিয়নের সংহতি সমাবেশ
শাহবাগে ছাত্র ইউনিয়নের সংহতি সমাবেশ  © টিডিসি ফটো

করোনাকালে আত্মহত্যা করা ১৫২ জন শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার জন্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে দায়ী করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে চার দফা দাবিতে সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে সগঠনটি।

তাদের দাবিগুলো হলো- করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন-ফি মওকুফ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রূপরেখা ঘোষণা, সব শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে করোনার টিকা দেওয়া, শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা।

সমাবেশে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল শিক্ষার্থীদের শিক্ষার দাবি আদায় না করতে পারলে নিজে আত্মহত্যা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা সাধারণ ছাত্র সমাজকে সঙ্গে নিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের জং ধরা তালা খুলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করব। একজন শিক্ষার্থীরও শিক্ষা জীবন আমরা ধ্বংস হতে দেব না। গত ১৬ মাসে ১৫২ জন শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমরা আর একজন শিক্ষার্থীরও লাশ দেখতে চাই না।

দীপক শীল বলেন, আমরা শিক্ষার্থীরদের বলতে চাই, আপনাদের শিক্ষার অধিকার আদায়ে ছাত্র ইউনিয়ন পাশে আছে। আপনি আত্মহত্যা করবেন কেন, দাবি আদায় না করতে পারলে প্রয়োজনে আমি ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এই শাহবাগে আত্মহত্যা করব।

দীপক শীল অভিযোগ করে বলেন, সরকার বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফেরানোর কোনো উদ্যোগ নেই। শিক্ষার্থীরা হতাশায় ভুগছেন, পড়াশোনা শেষ না করেই অনেকে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন। এই সরকার চায় যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাক। এগুলো আমরা সহ্য করব না।

সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, প্রায় সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অনিশ্চিত। সেই অনিশ্চয়তার মধ্যেও শিক্ষাখাতের কথা চিন্তা ভাবনা না করে উন্নয়নখাতে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। যখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছে, তখন সাত দিন পর পর শিক্ষামন্ত্রী মিডিয়ার সামনে এসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী একজন অযোগ্য শিক্ষামন্ত্রী, যিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা করতে পারছে না। এই করোনাকালে যে ১৫২ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে তার জন্য শিক্ষামন্ত্রীই দায়ী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থী বিভিন্ন ভিডিও গেমসসহ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। আর মাদকাসক্তি থেকে শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যা করছে।

ফয়েজ উল্লাহ বলেন, গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে শিক্ষার্থীদের জন্য কোনও বাজেট রাখা হয়নি। শিক্ষা বৃত্তির জন্য কোনও বাজেট রাখা হয়নি। এই যখন প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা, তখন অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থা নিয়ে ভাবতে হয়।

শিক্ষামন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, অবিলম্বে কার্যকর রোডম্যাপ ঘোষণা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন। এই বাজেটে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কোনও বরাদ্দ আমরা দেখিনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানেই না কতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে, কতজন শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে আর কতজন শিক্ষার্থী মাদকাসক্ত হচ্ছে। এতে বোঝা যায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে পঙ্গু করতে এই সরকার মাঠে নেমেছে।


সর্বশেষ সংবাদ