দুই দফা দাবিতে পিএসসির সামনে লাগাতার অবস্থান নন-ক্যাডার প্রত্যাশীদের
দুই দফা দাবিতে টানা তিন দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডার প্রত্যাশী প্রার্থীরা। গত ২১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সামনে তারা এই কর্মসূচি শুরু করেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলেও তাদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। এ সময় তারা দাবি আদায়ের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হলো- ৪৩তম বিসিএসের পূর্ণাঙ্গ নন-ক্যাডার তালিকা অবিলম্বে প্রকাশ করা এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত অধিযাচিত শূন্য পদে দ্রুততম সময়ে ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডার প্রার্থীদের সুপারিশ করা।
৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রত্যাশী আন্দোলনকারীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে যোগাযোগ, মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি, স্মারকলিপি প্রদান ও অনশনসহ নানা উপায়ে দাবি জানালেও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বারবার আশ্বাসের পরও দীর্ঘসূত্রতা ও অবহেলায় প্রার্থীরা চরম হতাশায় রয়েছেন।
আরও পড়ুন: গুচ্ছ ভর্তির নেতৃত্বে ইবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা নিয়ে যা জানা যাচ্ছে
তারা জানান, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় বিপুল সংখ্যক প্রার্থী প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও কাঙ্ক্ষিত ক্যাডার পদে সুযোগ না পেয়ে বর্তমানে নন-ক্যাডার তালিকায় অপেক্ষমাণ রয়েছেন। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ৪৩তম বিসিএসের নামে পিএসসির নিকট কোনো শূন্য পদ নেই; তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অধিযাচন এলে সুপারিশ করা সম্ভব হবে। পরবর্তীতে ২০ ফেব্রুয়ারি পিএসসি মনোনয়নের অভিমত প্রদান করে এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দপ্তরের কাছে অধিযাচন চেয়ে পত্র প্রেরণ করে।
তারা আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ৭ মে এবং পরবর্তীতে আরও কিছু পদসহ প্রায় ৯ হাজারের বেশি শূন্য পদ কমিশনে প্রেরিত হয়। কিন্তু এত বিপুল সংখ্যক শূন্য পদ প্রাপ্তির পরও কমিশন বিদ্যমান ‘নন-ক্যাডার নিয়োগ (বিশেষ) বিধিমালা, ২০২৩- অনুসারে সুপারিশ না করে বরং ২২ মে ২০২৫ তারিখে তা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়।
মহামান্য হাইকোর্ট বিগত কমিশনকে ৪৩তম বিসিএসের পূর্ণাঙ্গ নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ বর্তমান কমিশন ৪৪তম বিসিএসের পূর্ণাঙ্গ নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করেছে। ফলে বিসিএস ইতিহাসে একমাত্র ৪৩তম বিসিএসই এখনো পূর্ণাঙ্গ নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ না হওয়ার নজিরবিহীন অবস্থায় রয়েছে। এতে কমিশনের স্বচ্ছতা ও ন্যায়পরায়ণতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে প্রার্থীরা মন্তব্য করেন।
তাদের অভিযোগ, ‘নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ (বিশেষ) (সংশোধন) বিধিমালা, ২০২৫’ প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে পাঠানোর পর তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও এখনো তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়নি। যে বিধি তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, সেটিই এখন পরিকল্পিত বিলম্বের শিকার হচ্ছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার প্রত্যাশী মুহিত জানান, পিএসসির চেয়ারম্যান গতকাল (বুধবার) তাদের জানিয়েছেন যে, বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা তারা কথা বলবেন। পাশাপাশি প্রথম দফা দাবিটি নিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) একটি বৈঠক হওয়ার কথাও রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যতক্ষণ না আমাদের দাবি পূরণ হয়, আমরা পিএসসির সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাব।