বৈষম্যবিরোধীর সাংগঠনিক কাজে দুর্ঘটনার শিকার শাবিপ্রবির মাইক্রোবাস, সমালোচনার ঝড়
- শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৭:৫৬ AM , আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৩ AM

জুলাই আন্দোলনের শহিদ পরিবারের জন্য ঈদ উপহার নিয়ে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বৈছাআ) নেতারা। এতে কেউ গুরুতর আহত না হলেও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) মাইক্রোবাসের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি জানাজানির পর শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মাঝে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিকালে উপহার সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার সময় সিলেটের মোগলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব হাফিজুল ইসলাম।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাংগঠনিক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবহৃত গাড়ির নম্বর ‘সিলেট মেট্রো- চ ৫১০০৩৮। দুর্ঘটনার শিকার মাইক্রোবাসের একটি ছবিতে দেখা যায়, ট্রাকের ধাক্কায় পেছনের সম্পূর্ণ গ্লাস ভেঙে গিয়েছে এবং বাসের বডির অনেক ক্ষতি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস কোনো ছাত্র সংগঠন কিংবা বাহিরের কাজে ব্যবহার কারার নিয়ম না থাকলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের অনুরোধে বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ‘আজকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের সাংগঠনিক কাজে গাড়ি দেওয়া হয়েছে। অন্য কোনো সংগঠনের কাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গাড়ি অনুমোদন দিবে কিনা প্রশ্ন উঠে। আর এ কাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায় এড়াতে পারেন না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস কোনো ছাত্র সংগঠন কিংবা অন্য কাজে ব্যবহার করার নিয়ম নেই। এটা সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত কাজ। সেটা মানবিক কাজে হলেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের যদি এতোই দরকার হয় তাহলে টাকা দিয়ে বাস ভাড়া করে দিতে পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ। কোনো ছাত্র সংগঠনের সাংগঠনিক কাজে ব্যবহার করতে দেওয়া কোনোভাবেই উচিত না।’
সাংগঠনিক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহার করা যায় কিনা জানতে চাইলে শাবিপ্রবির বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক পলাশ বখতিয়ার বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী কোনো রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন না। অরাজনৈতিক কিংবা সমাজিক সংগঠন বাস চাইলে ব্যবহার করতে পারে অনুমতি নিয়ে। আমরাও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই মাইক্রোবাস নিয়েছিলাম।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ প্রশাসক অধ্যাপক আ ফ ম জাকারিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘শহিদ পরিবারদের ঈদ সামগ্রী বিতরণের জন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে একটি গাড়ির আবেদন করে। শহিদদের কথা চিন্তা করে উপাচার্য তাদেরকে অনুমতি দিয়েছেন। এখন দুর্ঘটনার ফলে গাড়ির ক্ষয়ক্ষতির মেরামত বাবদ অভিযুক্ত বাস মালিক সমিতি থেকে ক্ষতিপূরণ নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে যদি মালিক সমিতি অভিযুক্ত না হয়, সেক্ষেত্রে গাড়ির মেরামত বাবদ খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে।’
গাড়ি প্রদানের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক সরওয়ারদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকাতে আমাদের অনেকগুলো গাড়ি খালি আছে। যেহেতু তারা শহিদ পরিবারকে ঈদ সামগ্রী দিবে, এজন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে এটা সচরাচর দেওয়া হয় না।’