শিবির সেক্রেটারি
‘আগে ছাত্রলীগ করত, এখন ছাত্রদল করে— এমন ২১টি ঘটনা পেয়েছি’
- জবি কন্ট্রিবিউটর
- প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৮:২১ AM , আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৫, ০৮:৩৫ AM

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন, ‘যারা গুপ্ত বলে তাদের ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে, যারা গুপ্ত সংগঠন বলে, তারা কী বোঝাতে চায়। আগে ছাত্রলীগ করত, এখন ছাত্রদল করে এমন ২১টি ঘটনা আমরা পেয়েছি।’ বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ছাত্রশিবির আয়োজিত ইফতার মাহফিল শেষে জবি প্রেসক্লাবের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ছাত্ররা মিছিল কি আসলে চায়? ছাত্র শিবিরের নামে স্লোগান হোক, এটা কি শিক্ষার্থীরা চায়? আমরা ৫ তারিখের পর ঘোষণা দিয়েছি—যেটা ছাত্ররা চায় না, সেটা আমরা করবো না। ছাত্ররা চায় ইফতার মাহফিল, আমরা প্রতিদিন ২-৩ লাখ টাকার ইফতার করাচ্ছি, বিতরণ করছি। কয়েক হাজার ছাত্র ইফতার করছে। ছাত্ররা যা চাচ্ছে, আমরা তাই করছি। সায়েন্স ফেস্ট করেছি, প্রকাশনা উৎসব করেছি, ছাত্ররা প্রশংসা করেছে। ছাত্ররা মিছিল, মিটিং, ভায়োলেন্স, গ্যাঞ্জাম এগুলো চাচ্ছে না।’
শিবির সেক্রেটারি বলেন, ‘যারা গুপ্ত সংগঠন বলে, তারা কী বোঝাতে চায়? আগে ছাত্রলীগ করতো, এখন শিবিরের বিরুদ্ধে তারা বলছে। আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, কারা এগুলো বলে? তারা আমাদের দুটি ঘটনা সামনে এনেছে—ডিবেট ক্লাব, আবৃত্তি ক্লাবের নেতৃত্বে যারা ছিল, আমরা খোলাসা করেছি। আমরা এমন ২১টি ঘটনা পেয়েছি—আগে ছাত্রলীগ করতো, এখন ছাত্রদল করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরা চাইছি, রাজনীতির একটা গুণগত পরিবর্তন হোক। বুদ্ধিবৃত্তিক একটি রাজনীতি—অর্থাৎ দলীয় পারপাস এজেন্ডা বাস্তবায়ন হবে না, দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাউকে জোর করে মিছিলে নেওয়া যাবে না, সিট বণ্টনের নামে কাউকে জোর করে রাজনীতির মধ্যে নেওয়া যাবে না।’
নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ‘আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করবো। যে গ্রহণ করতে চাইবে, করবে। না গ্রহণ করলে করবে না। আমরা কোনো আইডিওলজি চাপিয়ে দিয়ে বিশাল বড় নেতা হতে চাই না, ছাত্রশিবির এটা গ্রহণ করবে না। আমরা কল্যাণমুখী কাজ করবো। আমরা শোম্যানশিপে বিশ্বাস করি না। আমরা যতটুকু কমিটি প্রয়োজন, কেবল কাজের জন্য ততটুকুই কমিটি গঠন করি।’
‘উপশাখা পর্যন্ত কে দায়িত্বশীল, সেটা কখনও ফলাও করে প্রকাশ করি না। আমরা তাদের কাজের মাধ্যমে তাদের উন্মুক্ত করি। আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি প্রকাশিত হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সভাপতি-সেক্রেটারি প্রকাশ করি। এর বাইরে যতগুলো প্রোগ্রাম করি, সেখানে আমাদের সকল সাথী-সদস্যই থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন যারা বলছে গুপ্ত, তারা কি বের হয়ে আসবে? ইচ্ছাকৃতভাবে তারা এগুলো বলে। কেউ যদি ছাত্রশিবির করে, দুর্নীতি না করে, ধর্ষণ না করে, টেন্ডারবাজি না করে, তাহলে এতে কারও সমস্যা কোথায়? আমাকে কেন শিবিরের লোগো লাগিয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে? যারা এগুলো বলে, তাদের আলাদা ইনটেনশন আছে। কী ইনটেনশন, আমি জানি না। নাকি সব ছাত্রশিবির কর্মীকে আইডেন্টিফাই করতে হবে, তারপর ছাত্রলীগের মতো যেটা করছে, সেটা করবে?’
‘আমরা উন্মুক্ত, আমি যেখানে যাই, সেখানে আসো। আমার সদস্য সম্মেলনে তোমাকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। আমাদের ৭-৮ হাজার সদস্য ছিল, সাংবাদিকরাও ছিল, ভিডিও ফুটেজ আছে। আমরা তো সবাইকে উন্মুক্ত করেই দিয়েছি। আমরা ব্যক্তিকে হাইলাইট করি না, এটা কোনো সিস্টেম নয়। ২৩০ জন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে দিলাম, যার মধ্যে ২০০ জন সদস্যের কোনো কাজ নেই—এমন কোনো সংস্কৃতি শিবিরে নেই। আমরা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন করি, এটা ছাত্রশিবিরের স্ট্রাকচারাল ঐতিহ্য।’