কোটা আন্দোলনের তিন নেতা নিখোঁজ

আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদ
আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদ  © টিডিসি ফটো

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয় আসিফ মাহমুদ গত চার দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। ছেলের সন্ধান পেতে ব্যাকুল তার বাবা-মা। একমাত্র সন্তানের খোঁজ পেতে সরকারের প্রতি আকুতি জানিয়েছেন তারা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আসিফের বাবা-মা সাংবাদিকদের মাধ্যমে তার ছেলেকে উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

একইসঙ্গে নিখোঁজ রয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও দুই সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ও রিফাত রশীদ। তাদের দুজনকেও গত ১৮ জুলাই থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। গতকাল ডিআরইউতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজদের স্বজনদের মধ্যে শুধু আসিফের বাবা মো. বিল্লাল হোসেন উপস্থিত হয়েছিলেন।

আসিফের বাবা মো. বিল্লাল হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘পত্রিকায় আসিফের গুমের খবর দেখে কুমিল্লার মুরাদনগর থেকে মঙ্গলবার ঢাকায় এসে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে তালাশ করেছি। তাকে পাই নাই। এখন আমার একটাই আবদার, আসিফের সন্ধান চাই।’

মেডিকেলে যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, ছেলে যদি আহতাবস্থায় কোথাও চিকিৎসাধীন থাকেন... তাই সবগুলো হাসপাতালেই খুঁজেছেন তিনি। এছাড়া বুধবার সকালে যাবেন ডিএমপির শাহবাগ থানায়। ছেলেকে রাতের মধ্যে খুঁজে না পেলে শাহবাগ থানায় জিডি করবেন।

ছেলের সন্ধান চেয়ে যখন কথা বলছিলেন বিল্লাল হোসেন, তখন তার পাশে বসা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ কেঁদে ফেলেন। পরে আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আসিফ মাহমুদের বাবা ছেলের খোঁজে বিভিন্ন হাসপাতালের মর্গে যাচ্ছেন। এর চেয়ে বেদনাদায়ক ও ন্যক্কারজনক আর কিছু হতে পারে না।

আসিফ, বাকের ও রিফাত তিনজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তাদের মধ্যে রিফাত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়েন। এই বিভাগের সাবেক ও বর্তমান ২২ জন শিক্ষক রিফাত রশীদের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গতকাল উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। শিক্ষকদের মধ্যে আছেন অধ্যাপক সি আর আবরার, আকমল হোসেন, রাশেদ উজ জামান, মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, রোজানা রশীদ, আবদুল মান্নান প্রমুখ।

এর আগে, গত  শনিবার গভীর রাতে রাজধানীর সবুজবাগ থানার নন্দীপাড়ায় বন্ধুর বাসা থেকে নাহিদকে তুলে নিয়ে যায় একদল লোক। এরপর টানা ২৪ ঘণ্টার বেশি নির্যাতনের পর রোববার ভোরে পূর্বাচলে ফেলে রেখে যায়। এরপর তিনি বাসায় আসলে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে লুঙ্গি পরে এসেছিলেন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।

 

সর্বশেষ সংবাদ