পায়ে পড়লেও ছাত্রলীগ নেতার কথা শোনেননি চবি ভিসি শিরীণ আখতার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৪, ০৯:২৫ AM , আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪, ০৯:২৯ AM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের পায়ে পড়েছেন ছাত্রলীগ নেতা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চাকরির জন্য’ ছাত্রলীগের ওই নেতা এ কাজ করেছেন বলে ক্যাম্পাসে আলোচনা আছে। এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন ভাইরাল। তবে তিনি এ আলোচনা অস্বীকার করেছেন।
পায়ে পড়া ওই নেতা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক গ্রুপ একাকার গ্রুপের নেতা ও বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি মইনুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, চাকরি নয়, ক্যাম্পাসে হামলা-ভাঙচুরের তদন্ত কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য তিনি সাবেক উপাচার্যের পায়ে পড়েছেন। তবুও উপাচার্য তার কথা শোনেননি।
ছাত্রলীগ নেতা মইনুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪১তম সিন্ডিকেট সভায় মেরিন সায়েন্স বিভাগে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে আমার কিছু কর্মী উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও শাটল ট্রেন অবরোধ করেন। এ ঘটনায় আমাকে প্রধান অভিযুক্ত করে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তিনি বলেন, আমি এর আগে অনেকবার ম্যামকে অনুরোধ করেছি, আমার ভুলের বিষয়টি স্বীকার করেছি। আমাকে ক্ষমা করে দিতে বলেছি। তদন্ত কমিটি থেকে নামটা বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু ম্যাম আমার কথা শোনেননি। সর্বশেষ বুধবার (২০ মার্চ) ম্যামের পায়ে ধরে বলেছিলাম, আপনি মায়ের মতো আমাকে ক্ষমা করে দিন। কিন্তু ম্যাম শুনেনি।
এ ঘটনার সময় তার সঙ্গে ছাত্রলীগের আরও দুই নেতা ছিলেন। তারা হলেন শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি মুজিবুর রহমান ও কে এম রোমেল হোসেন। তারাও নিজেদের নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন। তারা ছাত্রলীগের উপপক্ষ ভার্সিটি এক্সপ্রেসের নেতা।
আরও পড়ুন: শেষ কর্মদিবসে ৩৭ নিয়োগ, নতুন বিতর্ক নিয়ে বিদায় চবি ভিসি শিরীণের
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, সদ্য বিদায়ী উপাচার্য শিরীণ আখতার তার চট্টগ্রাম নগরীর লাভ লেনে অবস্থিত বাসার লিফট থেকে বের হচ্ছেন। তিনি বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মইনুল ইসলাম তার পায়ে পড়ে যান। উপাচার্য তাকে উঠতে বলছেন, তখনই মুজিবুর রহমান মুজিব শিরীণ আখতারের পা ধরতে যাচ্ছিলেন। এমন সময় উপাচার্য তাকে সরিয়ে দিয়ে তার গাড়িতে উঠে যান। ছাত্রলীগের এই দুই নেতা শিরীণ আখতারের গাড়ি থামিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন।
ফুটেজে আরও দেখা যায়, শিরীণ আখতার তাদের সঙ্গে চিৎকার করতে থাকেন। এক পর্যায়ে পুলিশ ডাকার কথা বলতে থাকেন। গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার আগ মুহূর্তে ওই দুই নেতা শিরীণ আখতারের কাছে দুই মিনিট সময় চেয়ে মিনতি করতে থাকেন।
জানা যায়, গত ২০ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম নগরের লাভ লেন এলাকায় উপাচার্যের বাসায় এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, তখনো শিরীণ আখতার উপাচার্যের দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। ঘটনার পর ক্যাম্পাসে গিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিরীণ আখতার উপাচার্যের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত হন মো. আবু তাহের।
দায়িত্ব ছাড়ার আগের দিন শিরীণ আখতার কোনো ধরনের বিজ্ঞপ্তি বা পরীক্ষা ছাড়াই ৩৭ কর্মচারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেন। নতুন উপাচার্য নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া চলে। তখন শিরীণ আখতার দাবি করেছেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা জিম্মি করে এসব নিয়োগ আদায় করেছে।