বিএনপির আন্দোলনে ঢাবি শিক্ষার্থীরা সংহতি জানিয়েছে: ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

বিএনপির সরকারবিরোধী চলমান আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সংহতি জানিয়ে পাশে দাড়িয়েছেন বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। সংগঠনটি বলছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অসংখ্যবার কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে জনগণের লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে। রবিবার (০৫ নভেম্বর) সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোয় রাষ্ট্রের মালিকানা থাকে জনগণের হাতে। আর কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে জনগণ উল্টো জবরদখলকারী শাসকের দাসে পরিণত হয়। বর্তমানে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের এহেন কর্তৃত্ববাদী আচরণের ফলে ঠিক সেরকমই এক অগণতান্ত্রিক শোষক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

‘‘আজ যখন বাকশালের ধ্বজাধারীরা আবারও এদেশের মানুষের গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতাসহ সকল নাগরিক অধিকার তিরোহিত করতে চাইছে, তখন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সংহতি জানিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে প্রতিবাদী চেতনার আঁতুড়ঘর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।’’

ছাত্রলীগের সমালোচনা করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নদীর চর দখলের ন্যায় বিগত বছরগুলোতে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ যেভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জবরদখল করেছে, তাতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক মতপ্রকাশের কোন সুযোগ ক্যাম্পাসগুলোতে নেই।

আরও পড়ুন: মাইকে ঘোষণা দিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের উপর হামলা

‘‘তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের আহুত হরতাল ও অবরোধের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে। জনতার আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রাখার যৌক্তিক দাবি পেশ করেছে। কিন্তু কতিপয় দলকানা শিক্ষক ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা নির্লজ্জের মতো শিক্ষার্থী সমাজের দাবি উপেক্ষা করতে চাইলেও সিংহভাগ শিক্ষার্থীর দাবিকে পুরোপুরি অবজ্ঞা করতেও তারা অক্ষম।’’

বিবৃতিতে ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম জনতার আন্দোলনে ঢাবির শিক্ষার্থীদের সংহতি প্রকাশের কারণে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন এবং অন্যায়, অপশাসনের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিরকালীন প্রতিবাদী চেতনাকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

তারা অচিরেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে দেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণকে ফিরিয়ে দেয়ার এবং সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের হাত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস পুনরুদ্ধার করে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। একইসাথে তারা শিক্ষকদের গণবিরোধী অবস্থান ছেড়ে সকল একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।

এর আগে, গতকাল রবিবার বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও সমমনা দলগুলোর টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের ফলে প্রথম দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের চতুর্থ সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, ‘আজকে অবরোধের কারণে আমরা শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিনি।’ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেনও একই তথ্য জানিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ