নিরাপত্তাহীনতায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীরা
- এ এইচ আজহার
- প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০১৮, ০১:০১ PM , আপডেট: ১২ আগস্ট ২০১৮, ০২:০৩ PM
নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল দেশের ছোট বড় প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মত। কিন্তু এক পর্যায়ে সরকার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করলে দেশের আন্যান্য এলাকার মত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও। বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিশ্বিবিদ্যালয়টির আন্দোলনকারী ও ক্ষেত্র বিশেষে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চবির এক শিক্ষার্থী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাঝামাঝি সময়ে তাকে বেশ বিব্রতকর অবস্থার পড়তে হয়েছে। তাও শুধুমাত্র ফেসবুকে কোটা সংস্কারের সমর্থনে একটা স্ট্যাটাস দেয়ার কারনে। প্রথমে তার স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট নিয়ে রাখা হয়েছিলো। পরবর্তীতে তাকে চিহ্নিত করে হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। বিষয়টি টের পেয়ে কিছুদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা বন্ধের পাশাপাশি পালিয়ে বেড়াতেও হয়েছে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে নিজের নিষ্ক্রিয়তার কারণ বলতে গিয়ে এভাবেই অতীতের দুঃসহ স্মৃতি তুলে ধরেন ওই শিক্ষার্থী।
তিনি বলেন, কয়েকদিনের আন্দোলনের জন্য পরবর্তী পুরো সময়টাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয়। তাই নিজেকে ন্যায্য দাবির আন্দোলন থেকে সরিয়ে নিয়েছি। নিরাপত্তা থাকলে আমি নিজে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতাম।
বর্তমানে শিক্ষার্থীদের অনেকেই ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলন সংক্রান্ত স্ট্যাটাস বা ব্যক্তিগত মতামত দেওয়া থেকেও বিরত রয়েছেন। নিরাপত্তাজনিত কারনে এ ব্যাপারে কেউই কথা বলতে চাননি।
এছাড়া আন্দোলন শেষ হওয়ার পর ঢাকার বসুন্ধরা এলাকায় পুলিশ ‘ব্লক রেইড’, গ্রেপ্তার, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ জন ছাত্রের বিরুদ্ধে ও রিমান্ড, সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিবির কিংবা ছাত্রদল আখ্যায়িত করা ও মামল--এসব কারণে সাধারন ছাত্রছাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে তারা জানান।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক উপ গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তাছাড়া ছাত্রদের পক্ষ থেকেও কেউ আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো অভিযোগও দেয়নি। তবে কেউ গুজব ছাড়ালে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান, ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা।
বিশ্ববিদ্যালয় সহকারি প্রক্টর লিটন মিত্র বলেন, বিষয়টিতে এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। এমন কোনো ঘটনা ঘটছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। তবে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি করার কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রক্টর জানান।