কর্মী শূন্যতায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ
এক বছর মেয়াদী কমিটিতে চলছে ৬ বছর
- রাকিবুল ইসলাম, শেকৃবি
- প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:৩১ AM , আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:৩২ AM
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) ছাত্রলীগের এক বছর মেয়াদী কমিটিতে ৫ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন নতুন কমিটি না হওয়ায় হতাশা, ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে পদ প্রত্যাশী নেতা-কর্মীদের মাঝে। এমন পরিস্থিতিতে মেয়াদোত্তীর্ণ শাখা ছাত্রলীগের ডাকা প্রোগ্রামগুলোতে কর্মী শূন্যতা দেখা দিয়েছে। ক্ষুব্ধ নতুন কমিটি প্রত্যাশী কর্মীরা প্রোগ্রামগুলো এড়িয়ে চলছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কর্মী সংকটে গেল আগস্টে কোন শোকসভা বা আলোচনা সভার আয়োজনও করতে পারেনি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এ ইউনিটটি।
নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে একই কমিটি থাকায় নেতা-কর্মীরা হতাশ, ক্ষুব্ধ। ফলে পদ প্রত্যাশী কয়েকজন সক্রিয় থাকলেও বেশিরভাগই এড়িয়ে চলেন ক্যাম্পাসভিত্তিক বা জাতীয় প্রোগ্রামগুলো। ক্ষুব্ধ কর্মীদের বেশিরভাগ প্রোগ্রামে জোরপূর্বক নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অতি শিগগিরই এমন সব ইউনিটিতে নতুন করে কমিটি দেয়া হবে। -সাদ্দাম হোসেন, সভাপতি, ছাত্রলীগ
সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২৮ নভেম্বর ১৪ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। মাঝে সাড়ে ৫ বছর অতিক্রম হলেও দেয়া হয়নি নতুন কমিটি। ২০১৭ সালের কমিটির ১৪ সদস্যের ৮ জনই বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
শাখাটির কেন্দ্রীয় ও হল কমিটিতে মোট ৫৯০ জন নেতা-কর্মী থাকলেও প্রোগ্রামগুলোতে ১০০-১৫০ জন নেতাকর্মী দেখা যায়। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই নতুন পদপ্রত্যাশীদের অনুসারী।
আরও পড়ুন: ভুয়া বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দাবি শেকৃবি ছাত্রলীগ নেত্রীর
জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের মিলনায়তনে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক শোক দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়। এতে অতিথি হিসেবে ছিলেন সাবেক খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
অনুষ্ঠানে প্রথমদিকে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি না থাকায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান আমন্ত্রিত অতিথিরা। পরবর্তীদের কয়েকজন পদপ্রত্যাশী আলাদাভাবে নিজ নিজ অনুসারীদের নিয়ে উপস্থিত হলে মিলনায়তন স্লোগানে মুখরিত হয়।
নেতৃত্বের পরিবর্তন দরকার। সাংগঠনিক গতিশীলতা দরকার। নেতৃত্বের পরিবর্তন হলে এমনিতেই সাংগঠনিক গতিশীলতা আসবে। -পদ প্রত্যাশী শাখা ছাত্রলীগ নেতা
নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি কমে যাওয়ার বিষয়ে একজন সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, একই কমিটি প্রায় ছয় বছর ধরে আছে। ছয় বছর আগে এক ছেলে যে পদে ছিল সে একই পদে আছে। তার কোনো পদোন্নতি হয়নি। সাংগঠনিক গতিশীলতা না থাকলে কর্মীরা হতাশ হয়। তারা সংগঠন বিমুখ হবে এটাই স্বাভাবিক।
শাখা ছাত্রলীগের আরেক নেতা বলেন, নেতৃত্বের পরিবর্তন দরকার। সাংগঠনিক গতিশীলতা দরকার। নেতৃত্বের পরিবর্তন হলে এমনিতেই সাংগঠনিক গতিশীলতা আসবে।
এই নেতা ১ সেপ্টেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশের কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই প্রোগ্রামে মিঠু-মিজান দেড় হাজার নেতাকর্মী নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু তিনশোর বেশি কর্মী মনে হয় ছিল না। এসব নেতৃত্বের দুর্বলতা। নতুন নেতৃত্ব আসলে কাউকে জোর করে প্রোগ্রামে নিয়ে যেতে হবে না।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অতি শিগগিরই এমন সব ইউনিটিতে নতুন করে কমিটি দেয়া হবে।