ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ঢাবির সেই হৃদয় সরকার

ছেলে হৃদয় সরকারকে পরীক্ষার হলে নিয়ে যাচ্ছেন সীমা। এই ছবিটি সে সময় ভাইরাল হয়েছিল
ছেলে হৃদয় সরকারকে পরীক্ষার হলে নিয়ে যাচ্ছেন সীমা। এই ছবিটি সে সময় ভাইরাল হয়েছিল  © ফাইল ছবি

দুই পায়ে শক্তি নেই হৃদয় সরকারের। মা কোলে চড়িয়ে তাকে নিয়ে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত। মাঝখানে স্কুল, কলেজ পার করেছেন। ২০১৮-১৯ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার দিন মা সীমা সরকারের কোলে করে পরীক্ষার হলে আসেন তিনি। পরে ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সাড়া পড়ে। এরপর সীমা রানি সরকার বিবিসির ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায়ও স্থান পেয়েছিলেন। সেই হৃদয় এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র।

সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত হৃদয় সরকার হুইলচেয়ারেই চলাফেরা করেন। সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে পদ পেয়েছেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি এই কমিটি ঘোষণা করেন।

হৃদয় সরকারের বাড়ি নেত্রকোনার সদর উপজেলায়। ছাত্রলীগের পদ পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একটা গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে। ভাষা আন্দোলন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৯’র গণ-অভ্যুত্থান, ৭০’র নির্বাচন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এমন একটা গৌরবোজ্জ্বল সংগঠনের কর্মী হতে পেরে আনন্দিত ও গর্বিত অনুভব করছি।

জানা যায়, ২০১৮ সালে শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বপ্রথম ভর্তি হন হৃদয় সরকার। এর আগে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের কোটা ছিল না। তখন শুধু দৃষ্টি, শ্রবণ ও বাক-প্রতিবন্ধী কোটা ছিল।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন

এ বিষয়ে হৃদয় বলেন, আমি যখন ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করি। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের কোনো কোটা ছিল না। ২০১৮ সালের পূর্বে ঢাবি দৃষ্টি, শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের কোটা ছিল। আমি যখন ভর্তি হতে চাই তখন জটিলতা দেখা দেয়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোটা পদ্ধতিতে সংস্কার আনে। আমাকে ভর্তি করানোর মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বপ্রথম শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটা চালু করে।

আশাব্যক্ত করে হৃদয় সরকার বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে আধুনিক ছাত্র সংগঠন হিসেবে দেখতে চাই। যেই সংগঠনটি বাংলাদেশের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে নিয়ে কাজ করবে। যেখানে সকল ধরনের ছাত্রদেরকে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। সেই বাংলাদেশের সকল অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এই প্ল্যাটফর্মে রাজনৈতিক চর্চার সুযোগটি পাবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সিন্ধান্ত নিয়েছে ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড শিক্ষার্থীদের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ