অস্ত্রধারী ছাত্রলীগ কর্মীদের বিষয়ে নির্বিকার প্রশাসন-পুলিশ
গত ১ জুন খাবার টেবিলে বসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়েছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ। এসময় প্রকাশ্যেই অস্ত্র হাতে দেখা গিয়েছিল বেশ কয়েকজন কর্মীকে। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে তিনজনের পরিচয়ও শনাক্ত করা হয়। তবে পরিচয় শনাক্ত হলেও তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এমনকি সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পুলিশের একজন পরিদর্শক আহত হওয়ার ঘটনায়ও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের সময় অস্ত্র হাতে অন্তত ৩০ নেতা–কর্মী হেলমেট, মুখোশ পরে, মুখে গামছা বেঁধে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে পদার্থবিদ্যা বিভাগের স্নাতকোত্তরের সাব্বির হোসেন, আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মোহাম্মদুজ্জামান ওমর ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাইম আরাফাতের পরিচয় নিশ্চিত করে ৩ জুন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। তাদের তিনজনের হাতেই রামদা থাকার তথ্য-প্রমাণ মিলেছে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে ২ জুন আলাওল হলের প্রাধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফরিদুল আলমকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। তবে বেঁধে দেওয়া এ সময়ের পরও প্রতিবেদন জমা হয়নি।
আরো পড়ুন: বাবা বর্গাচাষী, মা হারা সারজানা ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয়
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বলেন, এ ধরনের ঘটনায় তিন কার্যদিবস তদন্তের জন্য যথেষ্ট না। একারণে কর্তৃপক্ষের কাছে আরও ১০ কার্যদিবস সময় চাওয়া হয়েছে। বর্ধিত ওই সময়ের মধ্যে আমরা শাস্তির সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেব।
এ বিষয়ে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ভুক্তভোগী কেউ এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করেননি। তাই তাঁরা ব্যবস্থা নেননি।
উল্লেখ্য,গত ১ জুন রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হল-সংলগ্ন একটি খাবারের হোটেলে বসাকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির অনুসারী (সিএফসি) ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী (সিক্সটি নাইন) কর্মীদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে সেটি সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এ সময় কর্মীরা শাহজালাল হল ও সিএফসি গ্রুপের কর্মীরা শাহ আমানত হলে অবস্থান নিয়ে একে অপরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। পরে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সংঘর্ষের পর প্রক্টরিয়াল বডি, হল প্রশাসন ও পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হল এবং শাহ আমানত হলে ঘণ্টাব্যাপী তল্লাশি চালানো হয়ে। এ সময় বেশ কয়েকটি লাঠি, লোহার রড, স্ট্যাম্প ও হকিস্টিক উদ্ধার করা হয়।