০৯ নভেম্বর ২০২২, ১৬:১৮

ইতিহাসের নিকৃষ্টতম কমিটি আখ্যা দিয়ে ছাত্রমৈত্রী থেকে পদত্যাগ এক নেতার

আশরাফুল বিন শফি রাব্বী  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর ৪২ বছরের ইতিহাসে নিকৃষ্টতম কেন্দ্রীয় কমিটি হয়েছে উল্লেখ করে সংগঠনের নবগঠিত ‘সহ-সাধারণ সম্পাদক’ পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আশরাফুল বিন শফি রাব্বী। আজ বুধবার (৯ নভেম্বর) তিনি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। এর আগে গত ১ নভেম্বর ছাত্রমৈত্রীর দু'দিনব্যাপী ২১তম জাতীয় সম্মেলনের শেষ দিনের কাউন্সিল অধিবেশনে ৫৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে অতুলন দাস আলোকে সভাপতি ও অদিতি আদৃতা সৃষ্টিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

আরও পড়ুন: ছাত্র মৈত্রীর নেতৃত্বে আলো-সৃষ্টি 

রাব্বীর অভিযোগ, তিনি বর্তমান কমিটির সভাপতি অতুলন দাশ আলোকে অছাত্র এবং যুবনেতা মনে করেন। পাশাপাশি তার অভিযোগ, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর ২১তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে, আমার অসম্মতিতে আমাকে সহ-সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে, যা কাউন্সিল হাউজে ঘোষিত হয়েছে এবং আমি পত্রিকা মারফত জানতে পেরেছি। এছাড়াও, কমিটির গঠনতন্ত্র অমান্য করে, নিয়ম-নীতি-আদর্শ জলাঞ্জলি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

রাব্বী জানান, এতো কম সংখ্যক জমায়েত, কাউন্সিলর, ডেলিগেশন ও জেলা নিয়ে আগে কখনোই আমাদের সংগঠনের সম্মেলন ও কাউন্সিল হয়নি। সভাপতি এর জন্যে দায়ী কারণ গত কমিটির সাধারণ সম্পাদক তিনি। পাশাপাশি না করা সত্ত্বেও আমাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে এবং বিদায়ী সেক্রেটারি হিসেবে অতুলন দাশ আলো একটি সাংগঠনিক রিপোর্ট দিতে পারেন নাই। যা রাজনৈতিক রিপোর্ট দিয়েছেন তা টিস্যুপেপারের মতোই উচ্ছিষ্ট। এখানেই তার মেধার পরিচয় পাওয়া যায় এবং আমার জানা মতে তিনি গ্রাজুয়েট নন বলেও জানান তিনি। 

পাশাপাশি তার আরও অভিযোগ, বর্তমান সভাপতির সামনে সেক্রেটারি অদিতি আদৃতা সৃষ্টি ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান নূর নীরব গত ৩১ তারিখ টিএসসিতে সাবজেক্ট কমিটির মিটিংয়ে সবার সামনে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। সভাপতি চেয়ে দেখেছেন এবং পরবর্তীতে সমাধানও করেন নাই। বস্তুত তার মদদেই সব হয়েছিলো। পেশিশক্তির মাধ্যমে উপযুক্ত ফোরামে আমার কণ্ঠরোধ করেছেন সভাপতি, সেক্রেটারি ও সাংগঠনিক সম্পাদক।

তিনি জানান, যেহেতু আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি এবং পরিবারগতভাবে ওয়ার্কার্স পার্টির সমর্থক তাই কমরেড রাশেদ খান মেনন আমার আদর্শ, তাদেরও তাই হওয়া উচিত। কমরেড মেনন বাবার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তানি আর্মির জেলে থেকে অর্থনীতির মতো কঠিন বিষয়ে বিএ/এমএ পাশ করেছেন- ডাকসু ও ছাত্র সংগঠনের নেতা হয়েছেন। পরবর্তীতে পিএইচডির অফারও পেয়েছিলেন। রানিং স্টুডেন্ট থাকা সত্ত্বেও ভালো রেজাল্ট ও নেতৃত্ব দুই ই করা যায়। কর্মীদের আবেগ নিয়ে খেলে, গঠনতন্ত্র পিষ্ট করে, ভোট থেকে পালিয়ে, পেছন দরজার ষড়যন্ত্র করে ছাত্র নেতা হতে হয়না।

অরও পড়ুন: শিক্ষাখাতেই ২৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী’র

তার জিজ্ঞাসা, ছাত্রলীগ, দল, ইউনিয়ন তো বাদ ই দিলাম জাসদ ছাত্রলীগের দুই অংশের নেতারাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংবা অন্য বাম ছাত্র সংগঠনের নেতারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট, আমাদের নেতারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় তো দূরস্থান গ্রাজুয়েট ই নন অনেক বছর ধরে, অখ্যাত কলেজ বা গলি মহল্লার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া এসব নেতাদের কথা ছাত্ররা কেন শুনবে? কেন আমাদের সংগঠন এখন সারাদেশে সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিবিহীন?

সেজন্য তিনি দায়ী করেন, সভাপতি, সেক্রেটারি ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অযোগ্যদের দায়িত্বকে। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তারা বহিরাগত হিসেবে রাজনীতি করতে আসেন, সংগঠনের জন্যে এ বড় লজ্জার।