ফের জবি ছাত্রলীগ নেতার ফোনালাপ ফাঁস
বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে স্থগিত থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের কমিটির বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এবার অভিযোগ খোদ সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংগঠনটির নেতারা।
সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি অডিওতে শোনা যায়, শাখা সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির কুকর্মের বিষয়ে মুখ খুলেছেন খোদ ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুন্নি আক্তার। যা ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে।
তবে ছড়িয়ে পড়া এই অডিওর বিষয়টি অস্বীকার করছেন মুন্নি আক্তার। একই সাথে এই ওডিও ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একটি নম্বর থেকে চাঁদা চেয়েছে বলে দাবি করেন শাখা সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি।
ছড়িয়ে পড়া ওই অডিওতে শোনা যায়, মুঠো ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে মুন্নি আক্তার বলছেন, “এজন্যই তো বলতেছি ম্যানার কাকে বলে কিছুই জানে না। এরাই আবার জাতির কর্ণধার। মানে আগামী দিনের কর্ণধর। একদম ফালতু প্রেসিডেন্ট। জগন্নাথের এই ফালতু প্রেসিডেন্ট দিনে-রাইতে নারীদের ভিডিও কল দিয়ে দিয়ে, মানে আর কি বলবো! রাজনীতিটাই নষ্ট করে ফেলেছে। এখন সবাই মনে করে সবাই নেতা। কর্মীরাও মনে করে আমিই নেতা।”
আরও পড়ুন: নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে জবি ছাত্রলীগ
তবে কোন বিষয়কে কেন্দ্র করে কমিটির সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির বিরুদ্ধে একই কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুন্নি কাকে এই কথা বলছিলেন, কেনো বলছিলেন এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই কন্ঠ আমার না, আমি এমন কিছু বলিনি। কেউ গুজব ছড়াচ্ছে। একটি নম্বর থেকে ইব্রাহিম ভাইকেও একই অডিও দিয়ে টাকা চেয়েছে।”
শাখা সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, “আমি কখনও এমন কাজ করিনি। কোন মেয়ের সাথে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে সে বলুক। একটি নম্বর থেকে আমাকে অডিও পাঠিয়ে ভাইরালের হুমকি দিয়ে টাকা দাবি করেছে, আমি থানায় জিডি করেছি।”
এ ঘটনার কিছুদিন আগে সংগঠনটির আরেক নারী কর্মীর সাথে সভাপতি গ্রুপের এক কর্মীর ফোনালাপ ফাঁস হয়। ফোনালাপে শোনা যায়, সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী গ্রুপের মেয়েদেরকে নিয়ে রিসোর্টে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি। ফোনালাপের একপ্রান্তে ছিলেন সভাপতি গ্রুপের মেহেদি হাসান জনি।
এর আগে কমিটি স্থগিতের দিনই সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফৌজিয়া জাফরিন প্রিয়ন্তী। এ সময় আক্তারের বিরুদ্ধে নারী কর্মীকে কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ তোলেন এ নারী নেত্রী।
শাখা ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক অপকর্মের অভিযোগে গত ১ জুলাই কমিটি স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এক নেত্রীকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেওয়া এবং টেন্ডার ও চাঁদাবাজির অভিযোগে এ কমিটি স্থগিত করা হয়েছে বলে মনে করেন শাখা ছাত্রলীগ নেতাদের একাংশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে রাষ্ট্রপতির ছেলের গাড়িচালক মারধরের শিকার হন। এ ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের লোকজন জড়িত ছিলেন। এজন্য নতুন কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।