হকার বাবার চেষ্টায় মেডিকেলে চান্স মেয়ের, খরচ নিয়ে চিন্তা

বাবা-মায়ের সঙ্গে তারজিনা তামান্না আক্তার
বাবা-মায়ের সঙ্গে তারজিনা তামান্না আক্তার  © সংগৃহীত

ভিটে ছাড়া চাষাবাদ করার কোনো জমিজমা নেই। সেজন্য বিভিন্ন হাটবাজারে ভ্যানগাড়িতে করে কাপড় বিক্রি করেন তারা মিয়া। তা দিয়ে সংসার চললেও সঞ্চয় নেই। এমন কষ্টের মধ্যেও সুখবর এনেছেন তার মেয়ে তারজিনা তামান্না আক্তার। তিনি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পেয়েছেন।

সদ্য ঘোষিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় তামান্নার স্কোর ৭১.৫, মেরিট স্কোর ২৭১.৫। মেধাতালিকায় দুই হাজার ২৬৭ নম্বরে থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। কিন্তু সুখবর পেয়েও অনিশ্চয়তার মাঝে দিন কাটছে তামান্নার। এখন দারিদ্র্য তার স্বপ্নের পথে বাধা। বাবার কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পশ্চিম বেলদহ গ্রামে পরিবারের সঙ্গে থাকেন তামান্না। উপজেলার জয়মনিরহাট উচ্চবিদ‍্যালয় থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পান তিনি। পরে ভূরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পান। দুই বোনের মধ্যে তামান্না বড়।

বাবা তারা মিয়া তার অক্ষমতার কথা জানিয়ে বলেন, মেয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতে আরডিআরএস নামে এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছি। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ায় এ এনজিও ২৪ হাজার টাকা বৃত্তি প্রদান করে। সে টাকা খরচ না করে মেয়েকে রেটিনা কোচিং সেন্টারে ভর্তি করাই।

তামান্না বলেন, মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়ে খুবই আনন্দিত আমি। তবে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। বাবা-মাও খুব চিন্তায় আছেন। ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায়  স্থান হলেও অভাব-অনটনের সংসারে মেডিকেলে ভর্তি হওয়াটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভূরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ‍্যক্ষ খালেদুজ্জামান বলেন, মেয়েটি খুবই মেধাবী। কলেজে পড়ার সময় তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছি। এমন প্রতিভা দারিদ্র্যের কশাঘাতে যেন হারিয়ে না যায়, সে জন‍্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি।