জার্মানিতে ক্লাস-পরীক্ষার মাঝেই ঈদ আনন্দ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের

মো. ইকবাল হাসান
মো. ইকবাল হাসান  © টিডিসি ফটো

উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতিবছরই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। ইউনেস্কো প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন ৫২ হাজার ৭৯৯ জন শিক্ষার্থী। এসব বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা যেকোনো ধর্মীয় উৎসব কিংবা আচার-অনুষ্ঠান পরিবার ছাড়াই পালন করেন। বছর ঘুরে আবার অন্যদের সঙ্গে এসব শিক্ষার্থীদের সামনেও হাজির মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা।

তেমন একজন জার্মানিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মো. ইকবাল হাসান। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ সেশনে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ থেকে স্নাতক ও ২০১৯ একই বিভাগ থেকে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান জার্মানির এরলাঙ্গেন শহরে। তিনি বর্তমানে জার্মানির হকশুলে আনজবাখে ইন্টারন্যাশনাল প্রোডাক্ট এন্ড সার্ভিস ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স করছেন। পরিবারকে ছেড়ে বিদেশের বাড়িতে ইকবালের এটি তৃতীয় ঈদ।

ইকবাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, দেশের বাইরের ঈদ স্বাভাবিকভাবেই ভিন্ন হবে। আর তা যদি হয় কোনো অমুসলিম কান্ট্রি তাহলে তা আরও একটু বেশি ভিন্ন। ঈদের দিন দেশের মতো সাধারণত সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে গোসল সেরে মসজিদে যাই। ঈদের জামাত শেষে পরিচিত বন্ধু-বান্ধবদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে একসাথে কোথাও ঘুরতে যাই। অনেকের বাসায় ছোটখাটো আয়োজন থাকে। আমন্ত্রণ থাকলে সেখান থেকেও ঘুরে আসি। বিশেষ করে যারা ভালো রান্না জানেন এবং যারা পরিবার নিয়ে থাকেন তাদের আমন্ত্রণে একটু বেশিই খাওয়া হয়।

9d703e21-d711-441c-9398-371035fec485

তিনি আরও বলেন, যেহেতু জার্মানি মুসলিম দেশ না, তাই দেশের মতো বড় আয়োজন না থাকলেও মোটামুটি চেষ্টা করি সবাই মিলে যাতে ঈদের আমেজটা একটু হলেও উপভোগ করা যায়। তবে আমাদের অনেকের ঈদের দিন কাজের ডিউটি, ক্লাস অথবা পরীক্ষা থাকে। যার কারণে অনেকে ঈদের নামাজটাও ভালো মতো পড়তে পারেন না। কেউ নামাজ পড়ে দৌড় দেয় যার যার ডিউটিতে। এই বিষয়গুলো একটু কষ্টের।

পরিবারকে রেখে বিদেশের মাটিতে ঈদ নিশ্চয়ই বেদনাদায়ক। ইকবাল বলেন, প্রথম ঈদটা অনেক বেশি কষ্টের ছিল। চাঁদরাতে কাজ থেকে রুমে আসার পর বেশি খারাপ লেগেছিলো। জীবনে চলার পথে এসব মেনে নিতে হয়। ঈদ মানেই আমি বুঝি পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সময় কাটানো। তাদের ছাড়া ঈদের আনন্দ মোটামুটি ফিকেই হয়ে যায়। তারপরও জীবনের তাগিদে এসব কষ্ট মেনে নিতে হয়। চেষ্টা করি বিদেশে যারা আছেন তাদের সাথে সময় কাটিয়ে কষ্ট কিছুটা ভুলিয়ে রাখার।

ছোটবেলায় বাবা সাথে ঈদগাহের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, সবার মনেই ছোটবেলার ঈদগুলো বেশি দাগ কাটে। আব্বুর বাইকে চেপে দূরের এক ঈদগাহে যাওয়া হতো প্রতি ঈদে। সেখানে মেলা বসতো। বিভিন্নরকম খেলনা কিনে নিয়ে বাসায় আসতাম। দেশে থাকতে চেষ্টা করতাম সেই একই ঈদগায় যাওয়ার। বাবা বেঁচে নেই, সেখানে গেলে সেই দিনগুলোর কথা মনে করে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ি।


সর্বশেষ সংবাদ