হেরেছে চট্টগ্রাম, ফাইনালে মুখোমুখি কুমিল্লা-বরিশাল
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সুনীল নারাইনের রেকর্ড ফিফটির পর ফাফ ডু প্লেসি ও মঈন আলীর ঝড়ো ব্যাটে জয় সহজ হয় কুমিল্লার।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি)মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি বিকেল ৫টায় গড়ায়। যেখানে প্রথমে ব্যাট করা চট্টগ্রাম ১৯.১ ওভারে ১৪৮ রান করে অলআউট হয়। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ও ৪৩ বল বাকি থাকতেই ফরচুন বরিশালের সঙ্গে ফাইনাল নিশ্চিত করে কুমিল্লা।
এর আগে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ইমরুল কায়েসের এ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে হারিয়ে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করে সাকিবের বরিশাল। এদিন ডেথ বোলিংয়ের দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে সাকিবের বরিশাল ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে থামিয়ে দেয় ১৩৩ রানেই। ১০ রানের জয়ে বরিশাল জিতল টানা সপ্তম ম্যাচ।
এদিকে, আজকের ম্যাচে ১৪৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে অবশ্য শুরুটা ভালো ছিল না কুমিল্লার। প্রথম বলেই লিটন দাশ শরিফুল ইসলামের বলে শূন্য রানে ফেরেন। তবে এরপর ঝড়ো ব্যাট করে মাত্র ১৩ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন সুনীল নারাইন। বিপিএল ইতিহাসে এটিই দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদের।
আরও পড়ুন: নারীদের বিপিএল চান রুমানা
তিনি ২০১২ বিপিএলে মিরপুর শেরে বাংলায় বরিশাল বার্নার্সের হয়ে ১৬ বলে ফিফটি করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ১৬ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৫৭ করে বিদায় নেন। তিনি আউট হলেও জয় পেতে কোনো বেগ পেতে হয়নি কুমিল্লার। অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের ২২ এবং ডু প্লেসির ২৩ বলে ৩০ ও মঈনের ১৩ বলে ৩০ রানের ঝড়ে দাপুটে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে দলটি।
টস জিতে এর আগে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রাম অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল চট্টগ্রাম। দুই ওপেনার উইল জ্যাকস ও জাকির হাসান মিলেন ৩.৪ ওভারে ৩১ রান তোলেন।
তবে এরপরই ছন্দপতন শুরু হয় দলটির ব্যাটিংয়ে। চট্টগ্রাম শিবিরে প্রথম ধাক্কা আসে মারমুখী মেজাজে থাকা উইল জ্যাকসের বিদায়ে। শহিদুলের করা চতুর্থ ওভারের চতুর্থ বলে উইল জ্যাকস ধরা পড়েন কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের হাতে। আউট হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ৯ বলে ১৬ রান।
এমন সময় হঠাৎ ধস নামে চট্টগ্রামের ইনিংসে। ১২ রানের মাঝে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ৪ ব্যাটার। দারুণ ফর্মে থাকা চ্যাডউইক ওয়ালটনকে (২) এলবিডাব্লিউ করে দেন তানভীর ইসলাম। অপর ওপেনার জাকির হোসেন (২০) আর পাঁচ নম্বরে নামা শামীম হোসেনকে (০) ৬ষ্ঠ ওভারের পরপর দুই বলে ফেরান মঈন আলী।
৪৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর দলকে টেনে তোলার চেষ্টা শুরু করেন অধিনায়ক আফিফ হোসেন আর মেহেদি মিরাজ। কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ১০ বলে ১০ রান করা আফিফ হোসেনকে নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন মঈন আলী। দুর্দান্ত ক্যাচ নেন তানভীর ইসলাম। ৫০ রানে নেই ৫ উইকেট। ম্যাচের এই পর্যায়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন আকবর আলী আর মিরাজ।
১৩তম ওভারে চট্টগ্রামের স্কোর তিন অংক ছাড়ায়। ৪০ বলে ৬১ রানের চমৎকার এই জুটি ভাঙে আকবর আলীর বিদায়ে। আবু হায়দারের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হওয়ার আগে আকবরের সংগ্রহ ২০ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৩। উইকেটে আসেন বেনি হাওয়েল। কিন্তু বড় ইনিংস খেলার সুযোগ পেয়েও তিনি রান-আউট হয়ে যান ৩ রানে। ৩৮ বলে ৩ চার ২ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৪৪ রানের ইনিংস খেলা মিরাজকেও ফেরান শহীদুল। তার তৃতীয় শিকার ৯ বলে ১৫ করা মৃত্যুঞ্জয়। শেষ ওভারের প্রথম বলে নাসুম আহমেদকে (০) মোস্তাফিজ এলবিডাব্লিউ করে দিলে ১৪৮ রানে অল-আউট হয় চট্টগ্রাম।
কুমিল্লার হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন মঈন আলী আর শহীদুল। ম্যাচ সেরা হয়েছেন নারাইন। আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি একই ভেন্যুতে ফাইনালে মুখোমুখি হবে কুমিল্লা ও বরিশাল।