অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড হাইভোল্টেজ ম্যাচে এগিয়ে কারা?
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১১ জুলাই ২০১৯, ০১:৩৪ PM , আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৫:১৫ PM
বিশ্বকাপ শুরুর আগেও সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন কে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে অস্ট্রেলিয়ার কথা খুব বেশি ক্রিকেট অনুরাগীরা বলেননি। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া তাদের চিরাচরিত রুপে ফিরেছে, যেটা তারা স্বভাবত বিশ্বকাপের মতো আসরে খেলে থাকে। উল্টোদিকে ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপের আগে আসরের সবচেয়ে ফেভারিট দল হিসেবে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু মাঝপথে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে হেরে গিয়ে ইংল্যান্ডের সেমিফাইনাল খেলাই হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিল।
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বারমিংহামে, বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে। এর আগের দেখায় বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে ৬৪ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
অস্ট্রেলিয়া এই বিশ্বকাপে টপ অর্ডার নির্ভর ব্যাটিং করে আসছে। ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চ মিলে ১১৪৫ রান তুলেছেন। যা অস্ট্রেলিয়ার মোট রানের প্রায় ৪০ শতাংশ। তবে বিপদের মুহূর্তে কোলটার ডি নাইল, অ্যালেক্স ক্যারেও হাল ধরেছেন অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারে। বিশেষত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটিতে ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে।
অস্ট্রেলিয়ার বোলিংও প্রায় ব্যক্তি নির্ভর। ৯ ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়ে মিচেল স্টার্ক এখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্যাট কামিন্স বা বেহেন্ডরফরা অনেক পিছিয়ে স্টার্কের চেয়ে। বোলিংই এখনও পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র দুর্বলতা, তবে সেটাকেও কাটিয়ে উঠছে তারা দুর্দান্ত ফিল্ডিং ও পরিকল্পিত বোলিং দিয়ে।
ইংল্যান্ডেরও মূল দুর্বলতা বোলিং এবং সেটা অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় অনেক বেশি। জোফরা আর্চার ও মার্ক উড ছাড়া বিশেষায়িত বোলার নেই দলটিতে। মঈন আলী, আদিল রশিদরাও বিশ্বকাপে প্রত্যাশিত পারফর্ম্যান্স দেখাতে পারেননি। ক্রিস ওকস ৯ ম্যাচে ১০ উইকেট নিলেও গড় ৩৮।
ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা তাদের ব্যাটিং লাইন আপ। শুরুর দিকে জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। এরপর আছেন জো রুট-ইয়ন মরগ্যান। লম্বা মিডল অর্ডার তাদের, যেখানে প্রায় সবাই দ্রুত রান তুলতে সক্ষম। জস বাটলার, বেন স্টোকস, মঈন আলীদের পরেও ওকস-প্লাঙ্কেটরাও ব্যাট চালিয়ে ম্যাচ জেতাতে পারেন।
বোলিংয়ে জোফরা আর্চারের ওপর অতি-নির্ভরশীলতার কারণে বিশ্বকাপের রাউন্ড রবিন পর্বে ইংল্যান্ডকে ভুগতে হয়েছে।
ডেভিড ওয়ার্নারকে নিয়ে সংশয় ছিল বিশ্বকাপের আগে, নিউল্যান্ডসে বল ট্যাম্পারিংয়ের ঘটনার পর আবার ফিরে এসে অস্ট্রেলিয়া দলে কতটা মানিয়ে নিতে পারবেন। তিনি টুর্নামেন্টের আবহে ঢুকে সংশয় তো দূর করেছেনই, টুর্নামেন্টের বিচারেই অন্যতম কার্যকরী ব্যাটসম্যান হয়ে উঠেছেন। দুই ওপেনার মিলে এক হাজারেরও বেশি রান তুলেছেন এই বিশ্বকাপে তার নামের পাশে ছয়'শ এর বেশি রান। ৯ ম্যাচে ৬৩৮, গড় ৭৯.৭৫।
স্ট্রাইক রেট আগের চেয়ে একটু কমেছে ঠিক, কিন্তু তার এই ভিত গড়া ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করেই অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠে এসেছে। ইংল্যান্ড আসর শুরুর আগেই একটা ধাক্কা খায়, জেসন রয়ের দীর্ঘদিনের ওপেনিং পার্টনার অ্যালেক্স হেলস ড্রাগ নেয়ার দায়ে নিষিদ্ধ হন জাতীয় দল থেকে।
জেসন রয়ের সাথে কে ব্যাট করবেন? জনি বেয়ারস্টো? নাকি জো রুট? শেষ পর্যন্ত একাদশে ঢুকলেন বেয়ারস্টো। প্রথম ম্যাচে ইমরান তাহিরের স্পিন বুঝতে না পেরে কোনো রান না নিয়ে আউট হয়ে যান। সেই ম্যাচে জয় পায় ইংল্যান্ড।এরপর পাকিস্তানের সাথে ৩২, শ্রীলঙ্কার সাথে শুণ্য রানে এবং অস্ট্রেলিয়ার সাথে ২৭ আউট হন বেয়ারস্টো।
এই তিন ম্যাচেই ইংল্যান্ড হেরে যায়। ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে ইংল্যান্ডকে সেমিফাইনালে তুলে আনেন বেয়ারস্টো। বাংলাদেশের সাথে ৫১, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ৪৫ ও আফগানিস্তানের সাথে তার রান ৯০, এই তিন ম্যাচে জয় পায় ইংল্যান্ড।
আর শেষ দুই ম্যাচ যখন ইংল্যান্ডের জন্য বাঁচা-মরার লড়াই তখন জনি বেয়ারস্টো করলেন দুটি সেঞ্চুরি। ভারতের বিপক্ষে ১১১, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৬ রান।
মুখোমুখি অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড: মুখোমুখি ১৪৮ ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়া জয়ী ৮২। ইংল্যান্ড ৬১। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে মুখোমুখি ১০ বার।অস্ট্রেলিয়া জয়ী ৮। ইংল্যান্ড জয়ী ২। খবর: বিবিসি বাংলা।