মেসির অটোগ্রাফ নিতে গিয়ে প্রথম দিনেই হারালেন চাকরি

মেসির অটোগ্রাফ নিতে গিয়ে প্রথম দিনেই হারালেন চাকরি
মেসির অটোগ্রাফ নিতে গিয়ে প্রথম দিনেই হারালেন চাকরি  © সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে লিওনেল মেসির রাজত্ব চলছেই। ইন্টার মিয়ামির জার্সিতে দ্যুতি ছড়িয়েই যাচ্ছেন তিনি। এমনকি মেসির অটোগ্রাফ নিতে গিয়ে চাকরি হারাতেও লোকে এখন দুবার ভাবছেন না। লিওনেল মেসিকে সামনে থেকে দেখার ইচ্ছে চেপে রাখা মোটেই সহজ নয়। আর যদি তাঁর অটোগ্রাফ শিকার করা যায়, তাহলে তো কথাই নেই! ঠিক এই কাজটিই করেছিলেন এক যুবক। কিন্তু পেশায় পরিচ্ছন্নতাকর্মী এই যুবক এ কারণে চাকরিটাই খুইয়েছেন।

মাঠে ও মাঠের বাইরে দুই জায়গাতেই এখন চলছে মেসি-ম্যানিয়া। ঘটনাটি মূলত লিগস কাপে অরল্যান্ডো সিটির বিপক্ষে মেসিদের ম্যাচের দিন। বরখাস্ত হওয়া যুবকের নাম ক্রিস্টিয়ান সালামাঞ্চা। কলম্বিয়ান বংশোদ্ভূত এই যুবক পরিবারের সঙ্গে দেড় বছর ধরে মায়ামিতে থাকেন। দলটির টিম বাস যেখানে রাখা ছিল, তার পাশেই পরিচ্ছন্নতার কাজ করছিলেন তিনি। 

প্রথমবারের মতো ইন্টার মায়ামিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েই মেসির সাক্ষাৎ পেয়ে যান তিনি। চুক্তি অনুযায়ী, সেদিনই ছিল তাঁর চাকরিতে প্রথম দিন। কিন্তু মাঝের সময়টাতে যা ঘটল, তা হয়তো সালামাঞ্চা কখনোই ভুলতে পারবেন না। তিনি যেখানে কাজ করছিলেন, সেখানে  প্রিয় ফুটবলার মেসিকে দেখেই আর পেশাদার চরিত্র ধরে রাখতে পারেননি। আবেগে ভেসে গিয়ে ডাক দিয়ে বসেন মেসিকে।

উদ্দেশে প্রশংসাসূচক বাক্য বলার পর চেয়ে বসেন অটোগ্রাফ। মেসিও তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে এগিয়ে এসে অটোগ্রাফ দিয়েছেন পরনে থাকা আর্জেন্টিনার জার্সিতে। হাসিমুখে তার আবদার মেটান মেসি। কিন্তু এরপর যা হয়েছে তা হয়তো কোনোদিনই ভুলবেন না সালামাঞ্চা। কারণ চাকরিটাই যে গেল তার!

ঘটনাটির বর্ণনা দিতে গিয়ে সালামাঞ্চা বলেছেন, ‘যেখানে বাস পার্ক করে, সেখানে আমাকে বাথরুম পরিষ্কার করতে হয়েছিল। সৌভাগ্যবশত, আমি যখন সেখানে গিয়েছিলাম, তখন বাসটা এসেছিল এবং সব খেলোয়াড় বেরিয়ে আসছিলেন। সবার শেষেই বেরিয়ে আসেন মেসি।’

মেসির অটোগ্রাফ নিতে গিয়ে চাকরি গেল পরিচ্ছন্নতাকর্মীর

মেসিকে দেখে নিজেকে আর আটকাতে পারেননি সালামাঞ্চা। ডাক দিয়ে কী বলেছেন, তা জানালেন এভাবে, ‘তাঁকে চিৎকার করে বললাম, “এই যে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন!” শুনে তিনি ফিরে তাকালেন। আমি ওপরের ইউনিফর্মটি ওপরে তুলে ধরি, যার নিচে আর্জেন্টিনার জার্সি ছিল এবং আমার সঙ্গে একটা মার্কারও ছিল। তিনি আমাকে অটোগ্রাফ দিলেন।’

তবে এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া সালামাঞ্চার জন্য মোটেই ভালো ফল বয়ে আনেনি। পরবর্তী সময় কী হয়েছিল, তা জানিয়ে এই কলম্বিয়ান নাগরিক বলেছেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে নিরাপত্তারক্ষীরা সেখানে চলে এলেন। তাঁরা আমাকে বাইরে নিয়ে গেলেন এবং চাকরি থেকে বরখাস্ত করলেন। কিন্তু এর প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান ছিল।’

আরও পড়ুন: মেসির জোড়া গোলে শেষ ষোলোয় ইন্টার মিয়ামি

ইউরোপীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের সবাইকে বলা হয় পেশাদার আচরণ বজায় রাখতে। ক্লাবের কর্মী হোক কিংবা বাইরের কোনো কোম্পানির নিয়োগ করা কর্মী হোক, সবার জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য। তাঁদের বলা হয়, মাঠে আসা কোনো খেলোয়াড়কে বিরক্ত করা যাবে না। কিন্তু মেসিকে দেখে সেই নিয়ম মানতে পারেননি এই কলম্বিয়ান।

মেজর লিগ সকারে মেসিকে দেখার জন্য অবশ্য আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। ২১ আগস্ট শার্লটের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে মেসির লিগযাত্রা। গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় এক বছরের সমান জার্সি বিক্রি করেছে ইন্টার মায়ামি। এমনকি ক্লাবটির পরবর্তী ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে মাত্র ১৮ মিনিটেই!

তথ্যসূত্র-মার্কা


সর্বশেষ সংবাদ