প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার তামিমের
- টিডিসি স্পোর্টস ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৩, ০৩:৪৩ PM , আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২৩, ১০:৪২ AM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করার পর অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের ওপেনার তামিম ইকবাল। আজ শুক্রবার (৭ জুলাই) বিকেলে গণভবন থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। এর আগে দুপুরের দিকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলতে তাকে ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা যায়, দুপুর ৩টার দিকে গণভবনে প্রবেশ করেছিলেন তামিম ইকবাল। এ সময় তার সাথে ছিলেন স্ত্রী আয়েশা ইকবাল, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্তাজা এবং বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
প্রধানমন্ত্রীর বাসা থেকে বের হওয়ার পর তামিম বলেন, আজ দুপুরে আমাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বাসায় দাওয়াত করেছিলেন। উনার সঙ্গে অনেক্ষণ আমরা আলোচনা করেছি। উনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন খেলায় ফিরে আসতে। আমি আমার রিটায়ারমেন্ট এই মুহূর্তে তুলে নিচ্ছি। কারণ আমি সবাইকে না বলতে পারি কিন্তু দেশের সবচেয়ে বড় ব্যক্তিকে না বলা আমার পক্ষে অসম্ভব। তাতে অবশ্যই পাপন ভাই ও মাশরাফি ভাইয়ের বড় ভূমিকা ছিল। মাশরাফি ভাই আমাকে ডেকে নিয়েছেন। পাপন ভাই সঙ্গে ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে দেড়মাসের জন্য একটা ছুটিও দিয়েছেন।
তামিম অবসর ভেঙে ফেরার সিদ্ধান্ত জানানোর পর বলেন, এরপর পাপন ভাই কথা বলবেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) ১৬ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারকে বিদায় জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ওপেনার হিসেবে খ্যাত তামিম ইকবাল। এক সংবাদ সম্মেলনে অশ্রুসিক্ত নয়নে সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন এ তারকা।
সংবাদ সম্মেলনে এমন আকস্মিক সিদ্ধান্তের কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ জানাননি তামিম। তবে অনেকেই ধারনা করছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের সাম্প্রতিক বক্তব্যই তাঁকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। তামিম নিজেও নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, বোর্ড সভাপতির বক্তব্যে তাঁর মনে হয়েছে দলে হয়তো এখন আর সিনিয়র ক্রিকেটারদের প্রয়োজন নেই।
এদিকে, তামিমকে অবসর থেকে ফেরাতে উদ্যোগ নিয়েছে বোর্ডও। গতকাল রাতে ঢাকায় বোর্ড পরিচালকদের এক জরুরি সভার পর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের বলেছেন, সকাল (কাল) থেকে ওকে চেষ্টা করেছি, পাচ্ছি না। নাফিস ইকবালের মাধ্যমেও পাইনি। আমার সঙ্গে এখন অবধি যোগাযোগ হয়নি। আমি নাফিসের কাছে একটা মেসেজ পাঠাই, ওর সংবাদ সম্মেলনের পর। আমি বলেছি আমি চাই তামিম অধিনায়ক হিসেবে এই সিরিজ শেষ করুক। এরপর আমরা বসে ঠিক করব কী করা যায়। তার মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটারের এমন করা ঠিক হচ্ছে না। তার দলে থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর দেশের হয়ে ৭০টি টেস্ট, ২৪১টি ওয়ানডে এবং ৭৮টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তামিম। ২৫টি সেঞ্চুরি এবং ৯৪টি হাফ সেঞ্চুরিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজারের বেশি রান করেছেন বাঁ-হাতি এ ওপেনার।
তামিম ইকবালই একক বাংলাদেশী হিসেবে সীমিত ওভারের সংস্করণে সর্বোচ্চ রানের মালিক এবং একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে ক্রিকেটের তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরির অধিকারী। এছাড়াও তামিম ইকবাল একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২০টি সেঞ্চুরির অধিকারী এবং প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করেন। বর্তমানে তিনি টেস্ট, ওডিআই ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে বাংলাদেশী হিসেবে সর্বোচ্চ রানের অধিকারী খেলোয়াড়।