১৩ এপ্রিল ২০২২, ১৭:০৪

রাতে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার, স্কুলছাত্রের আত্মহত্যা

ওই স্কুলছাত্রের বাসার পরিস্থিতি   © সংগৃহীত

পাবনায় প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকারের ঘটনায় শাহ আলম (১৭) নামে এক স্কুলছাত্র আত্মহত্যা করেছে।

বুধবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, এদিন সকালে পাবনা সদরের জালালপুরে ওই স্কুলছাত্রের নিজ বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত শাহ আলম পাবনা সদরের জালালপুর গ্রামের আসাদুল সরদারের ছেলে ও জালালপুর মাওলানা কসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, ওই এলাকার স্থানীয় এক মেয়ের সঙ্গে আলমের দীর্ঘ দিনের প্রেম ছিল। কিন্তু ছয় মাস পূর্বে ওই মেয়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের চার মাস পরেই তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এতে শাহ আলমের সঙ্গে ওই মেয়ের পুনরায় যোগাযোগ শুরু হয়। এ ঘটনার এক পর্যায়ে মঙ্গলবার রাতে শাহ আলম ওই মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে তার বাড়িতে যায়।

আরও পড়ুন : সাজা ভোগের আশংকায় অধ্যাপকের গোপনে দেশত্যাগ

পুলিশ আরও জানিয়েছে, ওই মেয়ের বাড়িতে গিয়ে আলম জানায়, আপনার মেয়ের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়ে ছিল, তাতে আমার কোন সমস্যা নেই। আমি তাকে বিয়ে করতে চাই। এতে ওই মেয়ের পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে শাহ আলমকে মারধর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।

পরিবারের বরাতে পুলিশ আরও জানায়, বাসায় ফিরে নামাজ শেষে রাতে ঘুমিয়ে যায় শাহ আলম। তবে সেহরির সময় শাহ আলমের মা ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভাঙ্গা হয়। দরজা ভেঙ্গে দেখতে পারেন ঘরের আড়ার সঙ্গে আলমের মরদেহ ঝুলছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করেছে।

শাহ আলমের বাবা আসাদুল সরদার জানান, আমার ছেলে শাহ আলম অত্যন্ত মেধাবী ছিল। তাকে নিয়ে অনেক আশা করতাম। তার আত্মহত্যায় যারা প্ররোচনা দিয়েছে, তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি করছি।

এদিকে ওই মেয়ের মা অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, ওই স্কুলছাত্র রাতে আমাদের বাসায় এসেছিল। কিন্তু তাকে মারধর করা হয়নি। তবে বাড়ির বাথরুমের চিপা গলি দিয়ে দৌড়ে পালাতে গিয়ে হয়তো তার শরীরে আঘাত লাগতে পারে। বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। তাই তাকে মারধরের প্রশ্নই আসে না।

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে আলমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ছেলেটি বেকার হওয়ায় বিয়ে দিতে রাজি হইনি। তাকে অনেকবার বুঝিয়েছি।

এ ঘটনায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তার সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় সে আত্মহত্যা করেছে। তারপরও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। মরদেহ পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারে হস্তান্তর করা হবে। তবে পরিবার এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।