এসএসসির অ্যাসাইনমেন্টের সমাধানও ইউটিউবে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২১, ০৯:৩১ AM , আপডেট: ২০ জুলাই ২০২১, ০৯:৩১ AM
২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত অ্যাসাইনমেন্ট প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এটি আপলোড করা হয়েছে। প্রথম ধাপে তিন সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে।
মাউশি জানান, প্রথম পর্যায়ে দেওয়া ৬টি অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে ৫ অগাস্টের মধ্যে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি বা অনলাইনে জমা দিতে হবে। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে প্রতি সপ্তাহে দুটি করে ১২ সপ্তাহে মোট ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট করতে হচ্ছে। গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে এসব অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে।
এদিকে অন্যান্য শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্টের ন্যায় এসএসসির অ্যাসাইনমেন্টের সমাধানও করে একশ্রেণির ইউটিউবার ইউটিউবে আপলোড করেছে। মূলত ইউউিটবে কোনো ভিডিও যত বেশি ভিউ হবে সংশ্লিষ্ট ইউটিউবার তত বেশি টাকা পাবেন। তাই জনপ্রিয় এই বিষয়টি নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করেছেন অনেকে।
কিন্তু এতে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ভুল করার আশঙ্কাও আছে। তাই এর থেকে শিক্ষার্থীদের সাবধানে থাকার নির্দেশনা দিয়ে মাউশি বলছে, অ্যাসাইনমেন্টের মূল উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীর নিজস্বতা, স্বকীয়তা ও সৃজনশীলতা যাচাই করা। তাই নোট, গাইড, ইন্টারনেট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্যের লেখা নকল করে অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে জমা দিলে তা বাতিল হয়ে যাবে।
শুধু তাই নয়, এই অনৈতিক কাজের প্রমাণ পাওয়া গেলে শিক্ষার্থীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। এ ক্ষেত্রে মূল্যায়নকারী শিক্ষক সহায়তা করলে তাকেও শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিয়ে মাউশি বলছে, প্রত্যেক পরীক্ষার্থী যাতে অ্যাসাইনমেন্টগুলো পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
মাউশি মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ গোলাম ফারুক বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের শিখন কার্যক্রম অব্যাহত রাখার অংশ হিসেবে এই অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। শিক্ষণ-শিখনের বিভিন্ন পদ্ধতির একটি ধারাবাহিক মূল্যায়ন। অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম এই ধারাবাহিক মূল্যায়ন হিসেবে স্বীকৃত। এই উদ্ভাবনী কার্যক্রম ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের জন্য করা এই অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রমে চারটি স্তরকে যুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, শিক্ষার মাঠ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি (উপপরিচালক, জেলা-উপজেলা-থানা শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান, মূল্যায়নকারী শিক্ষক এবং অভিভাবক। এই চার স্তরের জন্য পৃথকভাবে ২৯ দফা নির্দেশনা আছে। অভিভাবকদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা যেন নকল বা অন্য কোনো অনিয়মের আশ্রয় না নেয় সে বিষয়টি যথাযথভাবে নিশ্চিত করবেন তারা। অ্যাসাইনমেন্ট লেখা শেষে তা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি যেন উপেক্ষিত না হয় সেটিও তারা দেখবেন। এই কার্যক্রমে প্রধান শিক্ষককে সহায়তার জন্য সব শিক্ষককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আলাদাভাবে শিক্ষার্থীদের প্রতি ৫ দফা নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, নকল বা অন্য কোনো অনিয়মের আশ্রয় নিলে এবং বিষয়টি প্রমাণিত হলে অ্যাসাইনমেন্ট বাতিল বলে গণ্য হবে। আর মূল্যায়নকারী শিক্ষকদের এ ব্যাপারে বলা হয়েছে, নকল বা অন্য কোনো অনিয়মের প্রমাণ পেলে তারা তা প্রধান শিক্ষককে অবহিত করবেন। অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার অবহেলা, অতিমূল্যায়ন বা অবমূল্যায়ন ও স্বজনপ্রীতি করা যাবে না। মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্টের ভেতরে সবল অংশ কালো কালি এবং দুর্বল অংশ লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত করতে হবে। উল্লিখিত বিষয়গুলো শিক্ষকরা যথাযথভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তা তদারকি ও নিশ্চিত করবেন প্রধান শিক্ষক। পাশাপাশি অ্যাসাইনমেন্টের যেগুলো বোর্ডে পাঠানোর কথা সেগুলো পাঠাবেন। আর উল্লিখিত গোটা বিষয় তদারকি করবেন শিক্ষার মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
করোনাভাইরাস মহামারীকালে পরীক্ষা নিয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী-অভিভাবকদের উদ্বেগের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের মাধ্যমে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি পরীক্ষা ও ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
তবে তার আগে শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বচনিক বিষয়ের উপর অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিখন ফল অর্জনের বিষয়ে পরিকল্পনা নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
প্রতিটি নৈর্বচনিক বিষয়ের উপর ৮টি করে অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে শিক্ষার্থীদের। আবশ্যিক বা চতুর্থ বিষয়ের উপর কোনো অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে না শিক্ষার্থীদের।