টিউশন ফি আদায়ে অভিভাবকদের উপর চাপ বাড়ছে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ মে ২০২০, ১২:৪৮ PM , আপডেট: ১১ মে ২০২০, ১২:৪৮ PM
করোনাকালীন প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তেমন কোনো সমস্যায় না পড়লেও নিজস্ব আয়ে চলা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো চরম অর্থ সংকটে পড়েছে। যাদের গচ্ছিত টাকা আছে সেসব প্রতিষ্ঠান তাদের ফান্ড থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করলেও, যাদের ফান্ডে টাকা নেই তারা মহাদুশ্চিন্তায় আছে।
এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি উদ্যোগে চলা কিন্ডারগার্টেনসহ নন-এমপিওভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের উপর টিউশন ফি আদায়ে চাপ বাড়ছে। অনেক প্রতিষ্ঠানই মানবিক আবেদনের মাধ্যমে এসএমএস পাঠিয়ে বেতন চাচ্ছে। আবার কেউ কেউ কী করবে ভেবে পাচ্ছে না? তবে নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিশোধে শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ বাড়ছে।
অন্যদিকে টিউশন ফি আদায় নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। কারণ তারা বেতন চাইলে সেটা অমানবিকতার পর্যায়ে পড়ে। আর বেশির ভাগ অভিভাবকও এই মুহূর্তে বেতন দিতে রাজি নন। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো বেতন আদায় না করলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনও দিতে পারছে না। আর এই মুহূর্তে শিক্ষকদের বেতন-বোনাস বাকি পড়লে সেটাও অমানবিকতার পর্যায়ে পড়ে।
সম্প্রতি ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে এক আদেশে টিউশন ফি আদায়ে চাপ প্রয়োগ না করার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিলে বা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে বকেয়াসহ মাসিক বেতন আদায়ের অনুরোধ জানানো হয় আদেশে।
গত শনিবার এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোটাই টিউশন ফি-নির্ভর। আমি অভিভাবকদের অনুরোধ করব, এখন তাঁদের খরচও একটু কম। তাই তাঁরা যেন টিউশন ফির ব্যাপারটা বিবেচনা করেন। তবে যাঁরা সমস্যায় রয়েছেন তাঁদের কথা ভিন্ন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকেও বলব, প্রয়োজনে কিছুটা ফি কম নেওয়া বা কিস্তিতে ফি নেওয়ার ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। যার মধ্য দিয়ে অভিভাবকরাও কিছুটা স্বস্তি পেলেন, স্কুল শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারল, বড় আকারের কোনো সমস্যায় পড়ল না। কিন্তু এখন সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বলার সুযোগ নেই যে তোমরা ফি নিবে না।’
এদিকে টিউশন ফি আদায়সহ নানা কাজে কিছু কিন্ডারগার্টেনের অফিস রুম খোলা রাখা হয়েছে। এমনকি সম্প্রতি মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় কিছু বাচ্চাকে স্কুল ড্রেস ও ব্যাগ হাতেও দেখা যায়। তবে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঐক্য পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব মো. সাফায়েত হোসেন বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী গত ১৭ মার্চ থেকে আমাদের সব স্কুল বন্ধ রয়েছে। কোনোভাবেই স্কুল খোলার প্রশ্নই ওঠে না। এমনকি আমরা গত মার্চ ও এপ্রিল মাসের টিউশন ফি এখনো নিতে পারিনি। ফলে শিক্ষকদের বেতনও দেওয়া সম্ভব হয়নি।’
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে রোজা ও ঈদের ছুটিসহ তা ৩০ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে ঈদের পরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না বলে জানা গেছে।