শিক্ষককে বিয়ের নোটিশ
প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তের দাবিতে মানববন্ধন, থানায় জিডি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৩, ১০:১৭ PM , আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৩, ১০:১৭ PM
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এক সহকারি শিক্ষককে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করার নোটিশ দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসী। মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁকে বরখাস্তের দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার (২২ আগস্ট) উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ মানববন্ধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জোয়াহের আলী, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য লিটন, সহকারি প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন প্রমুখ।
এ দিকে বিয়ের নোটিশ পাওয়া সহকারি শিক্ষক তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। এজন্য তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গোপালপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলামের সই জাল করে সোনালী ব্যাংক গোপালপুর শাখা থেকে বেশ কিছু টাকা উত্তোলন এবং বিধিবহির্ভূতভাবে স্কুলের ক্যাশ আত্মসাৎ করার ঘটনায় সকল শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির সাথে প্রধান শিক্ষকের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এর মধ্যে শিক্ষা অধিদপ্তরে দায়ের করা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সরকারি একটি তদন্ত চলছে। তদন্তে প্রধান সাক্ষী হলেন শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল। হিন্দু ধর্মবিষয়ক সহকারি শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল ২০১৬ সালের নভেম্বরে সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন।
রনির অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক তাঁকে দুর্নীতির বিষয়ে সাক্ষী না দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু রনি কথা না শোনায় প্রধান শিক্ষক গত ২৬ জুলাই এক নোটিশ জারি করেন। ওই নোটিশে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তাঁকে বিয়ে করার নির্দেশ দেন। বিয়ে না করলে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয়।
রনি আগামী অগ্রহায়নের আগে ধর্মীয় রীতি এবং পারিবারিক সমস্যার কারণে বিয়ে করতে পারবেন না বলে লিখিতভাবে প্রধান শিক্ষক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে জানান। কিন্তু প্রধান শিক্ষক তার অনুরোধ না মেনে তাকে স্কুলের শিক্ষার্থী এবং সহকর্মীদের সামনে নানাভাবে অপমান করতে থাকেন। গত বুধবার দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে ওই স্কুলে যান গোপালপুর উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার নাজনীন সুলতানা।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে রনি প্রতাপ বলেন, তদন্ত চলাকালে তদন্তকারী কর্মকর্তা নাজনীন সুলতানা এবং কয়েকজন শিক্ষকের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষক তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। প্রধান শিক্ষক অত্যন্ত নিষ্ঠুর মানুষ। এ জন্য তিনি প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা করছেন। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে তিনি থানায় জিডি করেছেন।
গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন বলেন, জিডির প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজনীন সুলতানা জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষকের আর্থিক এবং আচরণগত কিছু ত্রুটি রয়েছে। তদন্তকালে হয়তো হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত শেষ না করে বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।