গরমের সঙ্গে বেড়েছে লোডশেডিং, এসএসসির প্রস্তুতিতে হাঁসফাঁস শিক্ষার্থীদের
গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। ফলে অসহনীয় গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা হয়েছে। এ নিয়ে এসএসসি শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ক্ষোভ বাড়ছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তিন-চার ঘণ্টা করে লোডশেডিং হচ্ছে। আর ঢাকার বাইরের জেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলে এ লোডশেডিং দিনে-রাতে ১০-১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যুৎ নেই, এর মাঝে মাত্রাতিরিক্ত গরম। এতে করে এসএসসির প্রস্তুতিতে হাঁসফাঁস অবস্থা শিক্ষার্থীদেরও।
কুষ্টিয়া পুলিশ লাইন স্কুলের শিক্ষার্থী রাতুল ইসলাম বলেন, লোডশেডিং আর ভালো লাগে না। কথা নেই, বার্তা নেই। ঘন ঘন লোডশেডিং। বিদ্যুতের জন্য পড়ালেখার অসম্ভব ক্ষতি হচ্ছে।
গুঠাইল হাই স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী সাঈদুর রহমান বলেন, "রাতে অনেক বেশী লোডশেডিং হওয়ার কারণে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারি না ঠিকমত। তাছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। প্রচুর গরম আর বিদ্যুৎ না থাকায় গরমে আমরা এক বেহাল দশায় পড়ে যায় পরীক্ষার হলে। অনেক সময় তো হাত ঘেমে পরীক্ষার খাতাই ভিজে যায়।
রাতের তুলনায় বিদ্যুতের চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম থাকা সত্ত্বেও দিনের বেলায় শুধু ঢাকাতেই ৬০০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বিগত কয়েক দিনের তথ্যানুযায়ী দেশে প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। ফলে সারাদেশের গ্রাহকরা দিনের বিভিন্ন সময়ে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হচ্ছেন।
আরও পড়ুন: একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন বাবা-মেয়ে
রাকিব নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, সমস্যার অভাব নাই। এক তো ঈদের পরেই পরীক্ষা। বাসায় থাকেনা বিদ্যুৎ তারউপর অসহ্য গরম। আবার মাথা ফ্রেশ করার জন্য ঘুমাতে গেলেও থাকেনা বিদ্যুৎ। এতো কিছুর পরও পরিক্ষার হলে ৩ ঘন্টার মধ্যে ২ ঘন্টা ৫০ মিনিটই অন্ধকার আর গরমে বোর্ড পরিক্ষা দেওয়া লাগে। এই কারেন্ট এর জন্য ভালোকরে পড়তেও পারি না। উন্নয়নের জোয়ার এর ভেসে যাচ্ছি আমরা।
গত ৩০ এপ্রিল থেকে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এবার ১১টি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অংশ নিচ্ছে ২০ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ জন শিক্ষার্থী।
সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলের শিক্ষার্থী শ্রেয়া কুরি জয়া বলেন, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় অনেক মাথা ব্যাথা করে, যাদের সাইনাসের সমস্যা রয়েছে; সেটা বেড়ে যায়। আবার এমনিতেই পরীক্ষার সময় মাথায় বিভিন্ন ধরনের চিন্তা কাজ করে সেগুলো দিগুন মাত্রায় বেড়ে যায় গরমে।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় প্রায় ৩৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি রয়েছে, যা সন্ধ্যার পর বাড়তে পারে। ডিপিডিসি ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বেশি চাহিদার বিপরীতে ১ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন করছে, তাই ৩৪০ মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
এবার নয়টি সাধারণ এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ড মিলিয়ে গতবারের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ৫০ হাজার ২৯৫ জন। দেশের ৩ হাজার ৮১০ কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া দেশের বাইরে আটটি কেন্দ্রে থেকে এবার ৩৭৪ জন শিক্ষার্থী দেশের বড় এই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
করোনার আগে সাধারণত ফেব্রুয়ারিতে এই পরীক্ষা শুরু হত। করোনা ও বন্যার কারণে সাত মাস পিছিয়ে ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয় ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এপ্রিলে নেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিল সরকার।