বেলজিয়ামে উচ্চশিক্ষা: যেভাবে করবেন স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন
- সাগর হোসেন
- প্রকাশ: ২১ মে ২০২৪, ০২:৫৪ PM , আপডেট: ২১ মে ২০২৪, ০৩:৩৮ PM
পশ্চিম ইউরোপের উন্নত দেশ বেলজিয়াম। দেশটির সমাজ ব্যবস্থা, দৃঢ় অর্থনীতি, মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হওয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আদর্শ একটি দেশ এটি। এছাড়া অন্যান্য দেশের থেকে তুলনামূলক কম খরচে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদান করে থাকে ইউরোপের এ দেশ। বেলজিয়ামের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন স্কলারশিপও প্রদান করে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে করবেন বেলজিয়ামের স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন।
বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স নির্বাচন
বেলজিয়ামে রয়েছে বিশ্বমানের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। দেশটিতে পড়াশুনার মাধ্যম হল ডাচ। তবে দেশটি স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রাম ইংরেজী মাধ্যমে অফার করে থাকে। এই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণত ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল, পরিবেশ বিজ্ঞান, মেডিকেল সাইন্স সহ ব্যবসায় প্রশাসনের বিভিন্ন কোর্স অফার করা হয়ে থাকে। এজন্য আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট খুঁজতে হবে- আর বাছাই করে নিতে হবে আপনার পছন্দের কোর্স।
ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
১। পূরণকৃত আবেদন ফর্ম ও সাথে সংযুক্ত পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
২। পাসপোর্ট (১ বছরের মেয়াদ থাকতে হবে)।
৩। অফার লেটার।
৪। সিভি বা জীবন বৃত্তান্ত।
৫। মোটিভেশন লেটার।
৬। শিক্ষাগত যোগ্যতার সকল সার্টিফিকেট ও মার্কশীট।
৭। ইংরেজী ভাষা দক্ষতার সনদ।
৮। ব্যাংক সলভেন্সি ডকুমেন্টস (ইনকাম ট্যাক্স ও আয়ের উৎস)।
৯। টিউশন ফি পেমেন্ট-এর কপি।
১০। মেডিকেল সার্টিফিকেট।
১১। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (আপনার বয়স ২১ বছরের বেশি হলে)।
যেভাবে করবেন স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন
১। প্রথমে কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার পেতে হবে। এ জন্য আপনাকে প্রথমে আপনার পছন্দসই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবে প্রদত্ত আবেদন করার নিয়ম অনুসারে আবেদন করে, উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার সংগ্রহ করুন।
২। ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে।
৩। সমস্ত ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে।
৪। এরপর আপনাকে বেলজিয়ামের দূতাবাসে সাক্ষাৎকারের জন্য তারিখ নিতে হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে ভিসা কনস্যুলেট থাকলেও ভিসা অফিস নেই। তাই ভিসার জন্য আপনাকে যেতে হবে ইন্ডিয়ার দিল্লীতে।
৫। নির্ধারিত তারিখে সমস্ত ডকুমেন্টসসহ দূতাবাসে সাক্ষাৎকারের জন্য উপস্থিত হতে হবে।
ভিসা খরচ
বেলজিয়াম আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের থেকে স্টুডেন্ট ফি বাবদ সাধারণত ১৮০ ইউরো করে নিয়ে থাকে। তবে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া ও ফি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়।
তাই আবেদনের আগে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://diplomatie.belgium.be/en/embassies-and-consulates) চেক করার পরামর্শ দেওয়া হল।
রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদন
বেলজিয়ামে আসার পর আপনাকে স্থানীয় প্রশাসন অফিসে রেসিডেন্স পারমিটের জন্য নিবন্ধন করতে হবে। সাধারণত আট দিন বা তার বেশী সময় লেগে থাকে আবাসিক কার্ড পেতে। এই কার্ডটি আপনাকে আপনার অধ্যয়ন কোর্সের সময়কালের জন্য বেলজিয়ামে থাকার অনুমতি দেবে।
কোর্স শেষে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ
বেলজিয়ামে একটানা ৫ বছরের বেশি সময় থাকলে আপনি এই দেশে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আবাসন ব্যবস্থা এবং জীবন যাত্রার ব্যয়
বেলজিয়ামে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই রয়েছে আবাসন সুবিধা। তবে আপনি বাইরে থাকতে চাইলে তাও পাবেন। শেয়ার কিম্বা সিঙ্গেল ফ্লাট সব সুবিধাও রয়েছে এই দেশে। বেলজিয়ামে থাকা খাওয়া সাধারণত বাবদ ৪০০-৮০০ ইউরো খরচ হয়ে থাকে। তবে এই খরচ পুরাটাই নির্ভর করে ব্যক্তি বিশেষের উপর।
আরও পড়ুন: স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ
পার্ট টাইম জব
আপনি সপ্তাহে ২০ ঘন্টা পার্ট টাইম চাকুরী করার সুযোগ পাবেন বেলজিয়ামে। বেলজিয়ামে যদিও অফিসিয়ালি ৩ টি ভাষা আছে, তবে ডাচ ভাষার প্রাধান্য বেশি। তাই ডাচ ভাষা জানা না থাকলে পার্ট টাইম চাকুরী পেতে আপনাকে ভোগান্তি পোহাতে হবে।