সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ ৫ জন বহিষ্কার

সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি
সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি  © সংগৃহীত

ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনেক আজীবন ও অপর শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। শুক্রবার (৪ নভেম্বর) শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, দিল্লীতে অবস্থিত সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সার্কভুক্ত দেশের শিক্ষার্থীরা মাস্টার্স এবং পিএইডি প্রোগ্রামে উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে আসেন। আট দেশের রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে স্থাপিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণা-ভিত্তিক উচ্চশিক্ষায় স্বল্পসময়ে বেশ অগ্রগতি সাধন করেছে। আন্তর্জাতিক মানের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নিয়ে অনিয়মের অনেক অভিযোগ থাকলেও এই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করেছে।

এর আগে গত ১৩ অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্কলারশিপ বৃদ্ধির ৩ দফা দাবিতে তাদের ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে আন্দোলন করে আসছেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী জানান, কম বাজেটের দোহায় দিয়ে প্রতি বছর এখানে স্কলারশিপ কমানো হচ্ছে। অথচ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ঠিকই বাড়ছে।

আরও পড়ুন: কানাডায় পড়তে গিয়ে ঘৃণা-হামলার শিকার হচ্ছেন ভারতীয় শিক্ষার্থীরা

তিনি বলেন, আমরা স্কলারশিপের কথা বললে বলা হয় এটা প্রশাসনের হাতে না, গভর্নিং বডির হাতে। তাই যদি হবে—তবে স্কলারশিপ তারা কমায় কীভাবে? তাদের বেতন বাড়ে কীভাবে? গত পাঁচ বছরে কোন গভর্নিং বডি মিটিং হয়নি। এখানে যেই স্কলারশিপ দেয়া হয়; তা দিয়ে দিল্লীর মত শহরে থেকে ডিগ্রি সম্পন্ন করা বেশ দুরূহ। এখন স্কলারশিপের বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি করে শাস্তির মুখে পড়েছেন এসব শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই শাস্তির প্রতিবাদে গত শনিবার বিকেল ৩টা থেকে রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৮টি দেশের প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থী ২৪ ঘণ্টার অনশন করেছেন। তবে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাননি বলে অভিযোগ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের।

তারা জানান, শাস্তির আদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার এবং পুনরায় সংলাপ শুরু না করলে আজ রাতেই ৮টি দেশের ৪০-৫০ শিক্ষার্থী এই আমরণ অনশনে যোগ দেবেন। এদিকে, গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক কপিল কুমার শর্মার স্বাক্ষর করা এক আদেশে বহিষ্কার শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে হোস্টেল ত্যাগ করার আদেশ দেয়া হয়।

পিএইচডিরত ভারতের শিক্ষার্থী উমেশ জানান, আমাদের দেশে পিএইচডির জন্য জেআরএফ (জুনিয়র রিসার্চ ফেলোশিপ) দেওয়া হয়। সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি তার থেকে অনেক কম স্কলারশীপ দেয়। গবেষণা-নির্ভর একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত ফান্ডিং দেয়া না হয়, তবে মানসম্মত কোন গবেষণাই এখানে হবে না।

শিক্ষার্থীদের বহিস্কারে নিন্দা জানিয়েছেন শিক্ষকদের একটি বড় অংশ। আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শ্রীনিবাস বুররা জানান, এভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাঝে শিক্ষার্থীদের বহিস্কার করাটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অচিরেই এই আদেশ প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে এই অচলাবস্থা দূর করবেন।


সর্বশেষ সংবাদ