ইবিতে স্মৃতিসৌধ বেদিতে শিক্ষকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি
স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সংঘর্ষে জড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। শনিবার (২৬ মার্চ) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিসৌধে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশ ও শিক্ষক ইউনিটের মধ্যে দফায় দফায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেখানেই উপস্থিত ছিলেন। তবে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। পরে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকরা বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওই স্থান ত্যাগ করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় তারা বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালে মানববন্ধন করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে একে একে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংগঠনগুলো শ্রদ্ধা জানায়। একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশ ফুল দেওয়ার পর জিয়া পরিষদের নাম ঘোষণা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : শিবির সন্দেহে গ্রেফতার জবির ১২ শিক্ষার্থী রিমান্ডে
কিন্তু এ সময় বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের সভাপতি অধ্যাপক কাজী আখতার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তপন কুমার জোদ্দারের নেতৃত্বে অধ্যাপক মাহবুবর রহমান, অধ্যাপক আহসান উল আম্বিয়া, অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ, সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম, নাহিদ হাসান, হাফিজুল ইসলামসহ প্রায় প্রায় ৩০ জন শিক্ষক ফুল নিয়ে স্মৃতিসৌধ বেদিতে উঠেন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম তাদেরকে বাধা দেন। এরপরও তারা বেদীতে উঠে পরেন। এতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবুল আরফিন, অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক দেবাশীষ শর্মা, অধ্যাপক মিজানুর রহমান,অধ্যাপক মামুনুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক বাকি বিল্লাহ বিকুল, সাজ্জাদ হোসেনসহ প্রায় ১৫জন শিক্ষক তাদের ওপর চড়াও হয়ে উঠেন।
এ ঘটনার একপর্যায়ে তারা শিক্ষক ইউনিটের ফুলের তোড়া ভেঙে ফেলেন। এরপরও মূল ঝামেলা বাঁধে। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্মৃতিসৌধ বেদিতে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পরেন।
এ ঘটনায় তিন দফায় প্রায় ২০ মিনিট ধস্তাধস্তি করেন শিক্ষকরা। এ সময় শিক্ষক ইউনিটের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার নিকটে অভিযোগ জানাতে গেলে বাঁধা দেওয়া হয়। পরে তাদের সামনেই ধাক্কা দিয়ে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকদের বেদি থেকে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
প্রক্টর অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকরা বেদি থেকে নেমে যায়। এতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মাহবুবুল আরফিন বলেন, তাদের জুনিয়র শিক্ষকরা আমাদের সিনিয়রদের সাথে বেয়াদবি করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। আমরা কেন্দ্রকে জানিয়েছি।
বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তপন কুমার জোদ্দার জানান, স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদনের অধিকার সবার আছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর কর্মী হয়ে আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে না দিয়ে বিএনপির লোকদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গিয়েছিলাম। এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করছি।