ঢাকা কলেজে চালু হলো ‘সততা স্টোর’
ঢাকা কলেজের মূলভবনেই দোকান! রয়েছে খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবার, বিস্কিট, পানি, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ওয়াটার গ্লু, ডায়েরি, স্যালাইনসহ প্রায় ৩২ ধরনের পণ্য। শিক্ষার্থীরা যার যার মত প্রয়োজনীয় পণ্য নিচ্ছেন দোকান থেকে। তবে দরকষাকষি বা দামাদামির সুযোগটি একেবারেই নেই। নেই ভাংতির ঝামেলাও। কারণ এই দোকানে কোন বিক্রেতাই নেই। শুনতে কিছুটা অবাক লাগলেও ঢাকা কলেজে চালু হয়েছে বিক্রেতা বিহীন দোকান ‘সততা স্টোর’।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) এই সততা স্টোরের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহরাব হোসাইন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ এবং ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও অন্যান্য শিক্ষকরা।
শুরুতে বিক্রেতা ছাড়া দোকান কিভাবে চলবে অথবা শিক্ষার্থীরা বিষয়টি এই কিভাবে নিবেন তা নিয়ে সংশয় থাকলেও সময় গড়াতেই দেখা গেছে ভিন্নচিত্র। সাতদিন পর্যন্ত কোন ধরনের অভিযোগ বা হিসেবের হেরফের হয়নি।
আরও পড়ুন: ৩২ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ইতি টানছেন অধ্যক্ষ সেলিম
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেলো, কলেজের মূল ভবনের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের পাশেই সততা স্টোর স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে সাজানো রয়েছে খাতা, কলম, পেন্সিল, রাবার, মার্কার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, স্কেল, কেক, বিস্কিট, পানির বোতল, চকলেট, স্যালাইন, কোমলপানীয়সহ নানা ধরণের শিক্ষা উপকরণ।
কলেজ প্রশাসন জানায়, প্রাথমিকভাবে সকালে ক্লাশ শুরুর পর থেকে সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত উচ্চমাধ্যমিক শ্রেনির শিক্ষার্থীরা সততা স্টোর থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য সংগ্রহ করতে পারছেন। পরবর্তীতে সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য এটি উম্মুক্ত করা হবে।
ঢাকা কলেজের এই সততা স্টোরের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গঠন করা হয়েছে কমিটি। এতে পদাধিকার বলে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয়েছেন অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার ও উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ.টি.এম. মইনুল হোসেন। আহ্বায়ক হিসেবে ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের সম্পাদক মোহাম্মদ আনোয়ার মাহমুদ, সদস্য হিসেবে ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের স্কাউট লিডার মোসাম্মৎ আয়েশা আক্তার, ও ছাত্র প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের সিনিয়র রোভারমেট আসাদুল্লাহ গালিব ও রাকিবুল হাসান তামিম দায়িত্ব পালন করছেন।
সততা স্টোর পরিচালনা কমিটির সদস্য ঢাকা কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের স্কাউট লিডার মোসাম্মৎ আয়েশা আক্তার বলেন, এখন পর্যন্ত স্টক রেজিস্টার অনুযায়ী সব ধরনের ভারসাম্য বজায় রয়েছে। একটি টাকাও কম বেশি হয়নি। শুরুতে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলো আদৌ এই প্রকল্প সফল হবে কিনা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস শিক্ষার্থীদের সততার ন্যায়-নিষ্ঠার প্রতিফলন এখানে ঘটছে। শিক্ষার্থীরা এর মধ্য দিয়ে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ হবে।
এছাড়াও ঢাকা কলেজের সততা স্টোর একটি ভাল কাজের দৃষ্টান্ত হিসেবে আলো ছড়াবে উল্লেখ করে অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, সততা স্টোর একটি ভাল কাজের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। শিক্ষার্থীদের মাঝে সততার অভ্যাস গড়ে উঠবে। শিক্ষার্থীরা এই বয়স থেকেই সত্য ও সুন্দর মানসিকতা অবয়বে নিজেদের গড়ে তুলতে পারবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল কিন্তু ইতিমধ্যেই আমরা দেখেছি সবাই বিষয়টি খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে।