‘তুমি’ সম্বোধনে ক্ষুব্ধ, কুবি ছাত্রকে মারধর-চোখে আঘাত ছাত্রলীগ নেতার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) হল শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখার এক ছাত্রলীগ নেতাকে চিনতে না পেরে ‘তুমি’ সম্বোধন করায় বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আনিছুর রহমান।
সোমবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী চোখে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২তম ব্যাচের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ও শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াকিল আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সেলিম মিয়ার দোকানে চা পান করতে গেলে ১৩তম ব্যাচের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আনিছুর রহমানকে পরিচয় জিজ্ঞেস করেন।
পরিচয়ের একপর্যায়ে ছাত্রলীগ নেতাকে চিনতে না পেরে ‘তুমি’ সম্বোধন করেন আনিছুর। এ ঘটনায় ওয়াকিল আহমেদ ও তার বন্ধুরা দোকানের পেছনে নিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেন। মারধরের একপর্যায়ে ভুক্তভোগী কাকুতি-মিনতি করলে মারধরের মাত্রা আরও বাড়িয়ে চোখে আঘাত করেন ছাত্রলীগ নেতা ওয়াকিল।
আরও পড়ুন: প্রতিপক্ষের ব্যানার নিয়ে গেল কুবি ছাত্রলীগ
একপর্যায়ে তার চোখে আঘাত করলে সে কিছু দেখতে না পেয়ে চিৎকার করতে থাকে। ভুক্তভোগীর চিৎকার শুনে সহপাঠীরা এসে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হাসাপাতালে ভর্তির নির্দেশনা দেন।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী আনিছুর রহমান বলেন, ‘‘আমাকে ওয়াকিল ভাই পরিচয় জিজ্ঞেস করলে আমি আমার পরিচয় দেই। পরে মিরাজ নামের একজনের নাম জিজ্ঞেস করলে, আমি বলি মিরাজ কি তোমার বন্ধু? এতে আমার সাথে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। পরে তারা আমাকে দোকানের পেছনে নিয়ে মারধর শুরু করে।’’
অভিযুক্ত ওয়াকিল আহমেদ বলেন, ওই ছেলে সিগারেট খেয়ে আমার মুখের উপর ধোঁয়া ছেড়েছিল। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমাকে ও আমার মা-বাবাকে গালি দেয়। এসময় তার সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, একজন সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর করা অন্যায়। বিষয়টি জেনে আমরা সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেই ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে দেখতে এসেছি। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ডাক্তার হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা আগামীকাল প্রক্টরিয়াল টিম বসে এ বিষয়ে ব্যবস্থা সিদ্ধান্ত নেব।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কৌশিক সেন গুপ্ত বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে দেখে চিকিৎসা দিয়েছি, চোখের পেছনের অংশ আঘাত কতটা গুরুতর তা নির্ণয়ে আগামীকাল আমরা মেডিকেল বোর্ড বসবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, আমি প্রক্টরের সাথে কথা বলেছি। প্রক্টর রিপোর্ট দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।