চুল কর্তন: রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১২:১০ AM , আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২১, ১২:১০ AM
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ঘটনায় শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের স্থায়ী বরখাস্তের বিষয়ে ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আশ্বাসে’ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করেছেন। মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষার্থীদের সমঝোতা বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে ফারহানা ইয়াসিমন বাতেনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে আগামী ২৮ নভেম্বর মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আশ্বাস দেওয়া হয় বলে শিক্ষার্থী ও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এদিকে, আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য শেষে শিক্ষার্থীরা বৈঠক করে ক্লাস ও পরীক্ষায় ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানানো হয়েছে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র আবু জাফর বলেন, চুল কর্তনের ঘটনায় সিন্ডিকেট সভায় কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক মুলতবি করায় গত চারদিন ধরে তারা পুনরায় আন্দোলনে নেমেছিলেন। বিকালে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা-ইউএনও শাহ শামসুজ্জোহার মধ্যস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মো. আব্দুল লতিফের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক হয়।
তিনি আরও বলেন, বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনা শেষে ভিসি মহোদয় তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন এবং স্থায়ী বরখাস্তের বিষয়ে কোনো আইন না থাকায় বরখাস্ত করতে পারছেন না বলে জানান। আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে নতুন আইন প্রণয়ন করে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে ঘোষণা দেন।
উপাচার্যের আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন বলে জানান আবু জাফর। তিনি বলেন, বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন গঠিত তদন্ত কমিটি এই ঘটনায় তদন্ত করতে আসছে। তদন্ত কমিটিতে সাক্ষ্য শেষে শিক্ষার্থীরা বৈঠক করে কবে থেকে ক্লাস ও পরীক্ষায় ফিরবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য মো. আব্দুল লতিফ বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে সফল সমঝোতা বৈঠক হয়েছে। আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে তাদের দাবির বিষয়টির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো তদন্ত প্রতিবেদনে প্রাথমিকভাবে সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে; কিন্তু একজন শিক্ষিকাকে স্থায়ী বরখাস্তের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন না থাকায় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। ২৮ নভেম্বরের মধ্যে আলোচনা-পর্যালোচনা ও উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে আইন প্রণয়ণ করে ফারহানার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন কাঁচি দিয়ে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বলে অভিযোগে ওঠে। সেই শিক্ষার্থীদের একজন আত্মহত্যার চেষ্টা করলে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়।
এরপর ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর শুক্রবার ঢাকায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সভায় কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই মুলতবি ঘোষণা করা হলে আবার আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।