রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়

২৪ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ উপাচার্য, প্রশাসনিক ভবনে তালা

অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এতে ২৪ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য
অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এতে ২৪ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য  © ফাইল ফটো

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে চলমান পরীক্ষাগুলো সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। তবে ওই শিক্ষিকাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এতে ২৪ ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য (অতিরিক্ত দায়িত্বে) আব্দুল লতিফ।

অবরোধের পর এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনেও তালা ঝুলিয়েছে আন্দোলনকারীরা। প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে শনিবার (০২ অক্টোবর) সকালে তালা ঝুলিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছে তারা। তাদের এক দফা, এক দাবি- ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে স্থায়ী বহিস্কার করো।

গতকাল শুক্রবার (০১ অক্টোবর) সকাল থেকে প্রশাসনিক ভবনে ভেতরে উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে সেখানে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গত বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) থেকে শিক্ষার্থীদের নতুন অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম সিন্ডিকেট সভায় ফারহানাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সেই সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। স্থগিত করা হয় সব পরীক্ষা।

পরে শুক্রবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের জানান, বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি, শুধুমাত্র চলমান পরীক্ষা সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংশোধিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিও দেয়া হয়।

তবে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বরখাস্তে সন্তুষ্ট নন আন্দোলনকারীরা। এই শিক্ষকের স্থায়ী বহিস্কার চান তারা। সেই দাবিতে আন্দোলন আরও জোরালো হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে এবার ঝুলানো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের গেইটে তালা।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র নাজমুল হাসান পাপন বলেন, শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাময়িক বহিস্কারের ঘোষণার পর আমরা অনশন ভেঙেছি। তবে স্থায়ী বহিষ্কার না করা পর্যন্ত আমরা মাঠে রয়েছি।

গত রবিবার পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন। পরে, আন্দোলন শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩টি পদ ত্যাগ করেন তিনি। ঘটনাস্থলে একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো ছিল। ওই ক্যামেরার ভিডিওতে অভিযুক্ত ওই শিক্ষককে কাঁচি হাতে দেখা যায়।

উল্লেখ্য, গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস সংস্কৃতি ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের ১৪ জন শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেন বিভাগটির চেয়ারম্যান ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন। এই ঘটনায় পরে বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র নাজমুল হোসেন তুহিন (২৫) ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

পরবর্তীতে এই ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিচার চেয়ে সব ধরনের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। এরপর নানা মহল থেকে সমালোচনা শুরু হলে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন দায়িত্বে থাকা ৩টি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

সেই সঙ্গে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ